ডায়াবেটিসের রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা

Published by

সাধারণত খাবার গ্রহণ করার পর আমাদের শরীর সেই খাদ্যের কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাকে ভেঙে চিনিতে (গ্লুকোজ) পরিণত করে। এরপর প্যাংক্রিয়াস থেকে ক্ষরণ হওয়া ইনসুলিন নামের একটি হরমোন দেহের কোষগুলোকে গ্লুকোজ নিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। এই গ্লুকোজ দেহকে সচল রাখার জন্য অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।

ডায়াবেটিস কি ?

কখনো কখনো প্যাংক্রিয়াসে ঠিক মতো ইনসুলিন উৎপাদন হয় না বা উৎপন্ন হলেও এই হরমোনের কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। তখন রক্তের মধ্যে চিনি জমতে শুরু করে। এটি একটি গুরুতর ব্যাধি যেটিকে ডায়াবেটিস বা মধুমেহ বলা হয়। তবে ডায়াবেটিসের বেশ কয়েকটি ধরণ রয়েছে।

ডায়াবেটিসের ধরণ

টাইপ ওয়ান- সাধারণত শিশু এবং কিশোর অবস্থাতেই এই ধরণের ডায়াবেটিসের প্রকোপ দেখা দেয় বলে এটিকে জুভেনাইল ডায়াবেটিসও বলা হয়ে থাকে। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস একটি অটোইমিউন রোগ। দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা কোষগুলিকে নষ্ট করে দিলে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস হয়। বিটা কোষ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। শর্করার অনিয়ন্ত্রিত মাত্রার উপসর্গ হিসেবে ঘন ঘন প্রস্রাব , তৃষ্ণা বৃদ্ধি , ক্ষুধা বৃদ্ধি , ওজন হ্রাস এবং আরো কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। আরো কিছু অর্থাৎ ঝাপসা দৃষ্টি , ক্লান্তি এবং যে কোনও ক্ষত বা ঘা সারতে অনেক দেরি হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলি সাধারণত দ্রুত, কয়েক সপ্তাহের ভেতরে প্রকাশ পায়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের কারণ এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে মেডিকাল সায়েন্স মনে করে, বংশগত কারণ এবং পরিবেশ মিলে মিশে এই ধরণের ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে। ডায়াবেটিস রোগীদের পাঁচ থেকে দশ শতাংশ টাইপ ওয়ান-এ ভোগেন। সাধারণত টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস নিরাময় হয় না তবে ঠিক মতো চিকিৎসা গ্রহণ করলে ও  বিধিনিয়ম মেনে চললে নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই টাইপের মধুমেহ রোগীদের সারা জীবন ইনসুলিন নিতে হয়।

টাইপ টু – ডায়াবেটিসের এই ধরণটিকে ডায়াবেটিস মেলিটাস বা টাইপ টু বলা হয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি, ইনসুলিনের সক্রিয়তা কমে যাওয়া এবং এই হরমোনটির ঘাটতি ডায়াবেটিস মেলিটাস রোগের সঙ্গে জড়িত। যারা মধুমেহ রোগের শিকার তাদের নব্বই থেকে পঁচানব্বই শতাংশই টাইপ টু ডায়াবেটিসে ভোগেন। সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্করাই এই টাইপের ডায়াবেটিসে ভোগেন। তবে আজকাল শিশু, কিশোরকিশোরী এবং সদ্য প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও আগের তুলনায় অনেক বেশি টাইপ টু ডায়াবেটিসের রোগী দেখা যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, নতুন প্রজন্ম শারীরিক কসরত এড়িয়ে প্রায় সব কাজে কম্পিউটার ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি। টাইপ টু ডায়াবেটিসের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত তৃষ্ণা , ঘনঘন প্রস্রাব ও ওজন হ্রাস। এছাড়া ক্ষিদে বেড়ে যাওয়া এবং মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি অত্যধিক আকর্ষণ , ক্লান্তি এবং ক্ষত সারতে দেরি হওয়াও এই টাইপের মধুমেহ রোগের লক্ষণ। টাইপ টু ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলি আস্তে আস্তে প্রকাশ পায়। অতিরিক্ত ওজন, একটুও শারীরিক পরিশ্রম না করা থেকে শুরু করে বংশগত কারণ, অনেক কিছুই টাইপ টু ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী হতে পারে। লাইফস্টাইলে কয়েকটি বদল এনে টাইপ টু ডায়াবেটিসের প্রকোপ কমানো যেতে পারে। ওজন কমানো, শারীরিকভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠা, রোজ কিছুটা মেহনত করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ ছাড়াও মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান করলে সুফল পাওয়ার কথা।

জেস্টেশনাল (গর্ভাবস্থায়) ডায়াবোটিস- যে সব মেয়ের গর্ভে সন্তান আসার আগে ডায়াবেটিস থাকে না, গর্ভধারণ করার পরে তাঁদের অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। সাধারণত সন্তানের জন্মের পরে মায়ের Gestational Diabetes সেরে যায়। তবে গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিস ভবিষ্যতে মা ও শিশু উভয়েরই টাইপ টু ডায়াবোটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। 

প্রিডায়াবেটিক- এই ধরণটিকে ডায়াবেটিস হওয়ার ঠিক আগের পর্যায় বলা চলে। প্রিডায়াবেটিক স্তরে এক ব্যক্তির রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিন্তু টাইপ টু মধুমেহর তুলনায় কম থাকে। রক্তে শর্করার মাত্রা এই স্তরে থাকলে পরে টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। তবে প্রিডায়াবেটিক স্তরে থাকা বেশিরভাগ ব্যক্তি নিজেদের সমস্যা বুঝতে পারেন না।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ

i.ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও তৃষ্ণা।

ii.দুর্বল লাগা ও আচ্ছন্ন ভাব।

iii.খিদে বেড়ে যাওয়া।

iv.সময়মতো না খেলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া।

v.মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া।

vi.কোনও অসুখ ছাড়া হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া।

vii.শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া সহজে সারতে চায় না।

viii.চামড়ায় শুষ্কভাব ও চুলকুনি।

ix.বিরক্তি ও খিটখিটে মেজাজ।

x.চোখে কম দেখতে শুরু করা।

ডায়াবেটিসের কারণ

শারীরিক কসরত না করা :- টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম কারণ হল শারীরিক নিস্ক্রিয়তা অর্থাৎ একটুও পরিশ্রম না করা।

মানসিক চাপ :- যে সব কারণে ডায়াবেটিস হয় সেগুলির মধ্যে একটি হল অত্যধিক মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। মানসিক চাপ টাইপ টু ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ। ব্যক্তিগত সমস্যা, পারিবারিক অশান্তি বা যে কোনও কারণে অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া :- দৈনন্দিন কাজকর্মের পর পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। মেডিকাল সায়েন্স এ কথা স্বীকার করে।

রাতে বেশি খাওয়া :- গবেষণা বলছে, রাতে বেশি খাওয়া এবং বেশি খাবার পর পরই ঘুমাতে যাওয়ার জেরে ডায়াবেটিস হতে পারে। এই অভ্যাস রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

সকালের জলখাবার না খাওয়া :- সকালের জলখাাবার গোটা দিনের খাওয়াদাওয়ার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব ডায়াবেটিস রোগী সকালের জলখাবার বাদ দেন যান তাঁদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।

চিনির বিকল্প মিষ্টি খাওয়া :- বাজারে বহু দশক ধরে খাবারের মিষ্টত্ব বাড়ানোর জন্য চিনির বিকল্প পাওয়া যায় যা ডায়াবেটিসের কারণ হয়ে উঠেছে। ২০১৪ সালে ‘নেচার’ জার্নাল একটি গবেষণার বিশদ বিবরণ প্রকাশ করেছিল। এই গবেষণায় বলা হয়েছিল, বাজারে “জিরো ক্যালরি” নামে চিনির যে সব বিকল্প বা Artificial Sweetener পাওয়া যায় সেগুলির অন্যতম উপাদান অতিরিক্ত সোডা রক্তে শর্করার (চিনি) পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

চিনা খাবার এবং প্রসেসড ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও পানীয় :- চাইনিজ বা চিনা খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত ফ্যাট, ক্যালরি, সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট এবং মোনো সোডিয়াম গ্লুটামেট (আজিনোমোটো) দেওয়া হয়। প্রসেসড ফুড ও পানীয়তেও এই উপাদানগুলি অতিরিক্ত পরিমাণে থাকে। এই সব উপাদান দেহে চিনির মাত্রা অনেক বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে কমলালেবুর স্বাদযুক্ত বাজারলব্ধ চিনা খাবার , টক-মিষ্টি স্বাদের সমস্ত খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর।

রোগ নির্ণয়

ডায়াবেটিস নির্ণয় করার জন্য বহুল ব্যবহৃত নির্ভুল পদ্ধতি হল ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি। এই পদ্ধতিতে সকালে খালি পেটে একবার রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হয়। এর পর পঁচাত্তর গ্রাম গ্লুকোজ শরবত পানের দুই ঘণ্টা পর দ্বিতীয় দফায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এই টেস্টের সাহায্যে নির্ভুলভাবে ডায়াবেটিস ও প্রি-ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যায়। কিছু দিন আগে পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস নির্ণয় করা হত।

কিন্তু অনেকেই এই টেস্ট করাতে চাইতেন না। তার কারণ, অন্তত আট ঘণ্টা না খেয়ে সকালে রক্তের নমুনা দিতে হবে, দুবার রক্ত দিতে হবে এবং মাঝে দুই ঘণ্টা সময় বিশ্রাম নিতে হবে। তার ওপর অনেকেই মিষ্টি সরবত পান করতে চাইতেন না। বিজ্ঞানীরা তাই সুবিধাজনক কোনো পদ্ধতি খুঁজছিলেন। 

আজকাল সর্বত্র ডায়াবেটিস সনাক্তকরণের জন্য এইচবিএ১সি নামের একটি টেস্ট করা হয়। এই টেস্ট রক্তে শর্করার নব্বই দিনের গড় মাত্রা জানিয়ে দেয়। যে কোনো সময় এই টেস্ট করা যায় এবং একবারই রক্তের নমুনা দিতে হয়। এই পরীক্ষা গ্লাইসেটেড হিমোগ্লোবিন টেস্ট নামেও পরিচিত। তার কারণ, গ্লুকোজ এবং ফ্রুকটোজ সহ বেশিরভাগ মনোস্যাকারাইড (সিম্পল সুগার) গ্লাইসেট করার (শর্করার অণু রক্তের প্রোটিন ও লিপিডের সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রক্রিয়া) জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে মিশে যায়। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যে অনুপাতে চড়তে থাকে, ঠিক সেই অনুপাতেই গ্লুকোজ হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে মিশতে থাকে। হিমোগ্লোবিনে গ্লুকোজের অধিক মাত্রাই গ্লাইসেটেড হিমোগ্লোবিন অথবা রক্তে HBA1c মাত্রা হিসেবে প্রতিপন্ন হয়। আমেরিকান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের গাইডলাইন অনুযায়ী এইচবিএ১সির সূচক ৫.৭-এর নিচে থাকলে তাকে স্বাভাবিক ধরা যায়। এটি ৬.৫-এর বেশি হলে ডায়াবেটিস আছে বলে মনে করা হয়। সূচক ৫.৭ থেকে ৬.৫-এর মধ্যে থাকলে প্রি-ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিসের আগের অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

তবে এইচবিএ১সি পরীক্ষা উপযুক্ত ল্যাবরেটরিতে যথার্থভাবে করতে হবে। কারো জেনেটিক রক্তের রোগ বা রক্ত ভেঙে যাওয়ার সমস্যা থাকলে এই পরীক্ষায় ঠিকঠাক ফল পাওয়া যায় না। তার ওপরে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নির্ণয়ে এই টেস্ট করা যায় না। চল্লিশ বছর বয়সের পর বেশি ওজন, এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস ও অন্যান্য ঝুঁকি থাকলে নিয়মিত ডায়াবেটিস স্ক্রিনিং করা উচিৎ। এই উদ্দেশ্যে ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা এইচবিএ১সি পরীক্ষা করা যেতে পারে।

চিকিৎসা

ইনসুলিন প্রয়োগ- ইনসুলিন ইঞ্জেকশন দিলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। সাধারণত রোজ একটা করে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা অনেক উন্নত হচ্ছে। আগে ছুঁচ দিয়ে ইনজেকশন দিতে হত। সেই ছুঁচ অনেক মোটা। এখন ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য কলম বা পেনের মতো ডিভাইস এসে গেছে। আবার আগে ইনসুলিন নেওয়ার পর খাওয়ার আগে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হত। এখন এমন ইনসুলিন পাওয়া যায় যা শরীরে দ্রুত সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খাবার খাওয়া যায়। তার ওপর প্রতি দিন ছুঁচ ঢোকানো সবার পক্ষে সুবিধাজনক নয়। এখন কিছু ইনসুলিন সপ্তাহে একদিন দিলেই হয়। ডায়াবেটিসের সঙ্গে শরীরের স্থূলতার অকাট্য সম্পর্ক রয়েছে। যে ব্যক্তির ওজন যত বেশি তার ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও তত বেশি। এর ফলে এক পর্যায়ে ইনসুলিনের ওপর নির্ভরতাও বেড়ে যায়।

এখন কিছু ইনজেকশন এসে গেছে যেগুলি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে আবার একই সঙ্গে ওজনও কমিয়ে দেয়। এগুলি খুবই উন্নত মানের ইঞ্জেকশন যদিও এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশে এগুলোর দাম বেশি বলে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। অন্য দিকে প্রথম বিশ্বে মাসে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা এমন উন্নত জায়গায় পৌঁছে গেছে যে মাসে এক বার ইনসুলিন নিলেই চলে। মুখে খাওয়ার ইনসুলিন বড়ি বা ক্যাপসুলও হয়তো খুব শিগগিরি বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া যাবে। তৃতীয় বিশ্বে এখনো এগুলি বাজারে পাওয়া যায় না।

ইনসুলিন উৎপাদনকারী নষ্ট কোষ পুনরায় তৈরি করা

২০১৮ সালে ব্রিটেনের কার্ডিফ অ্যান্ড ভেলস ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক জানান, তাঁরা এমন একটি ওষুধ নিয়ে কাজ করছেন যা ডায়াবেটিস রোগীদের দেহে ইনসুলিন হরমোন উৎপাদন করার কোষ নতুন করে তৈরি করতে পারবে। তাঁরা মানবদেহে ট্রায়ালের কথাও জানিয়েছিলেন।

কৃত্রিম প্যাংক্রিয়াস

ইনসুলিন হরমোন তৈরি হয় প্যাংক্রিয়াসে। ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হচ্ছে কৃত্রিম প্যাংক্রিয়াস। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এটি তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে ডিভাইসটির একটি অংশ ডায়াবেটিক রোগীদের চামড়ার নিচে লাগানো থাকে। এর সঙ্গে এমন একটি সেন্সর রয়েছে যা শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নির্ণয় করতে পারে এবং সংকেত পাঠাতে পারে। এই অত্যাধুনিক ডিভাইস থেকে মোবাইল ফোনে সংকেত পাঠানোর ব্যবস্থাও আছে। কতটা ইনসুলিন প্রয়োজন সেই সংকেত এই ডিভাইসের আরেকটি অংশ ‘ইনসুলিন পাম্পে’ পৌঁছে যায়। এই পাম্প উপযুক্ত মাত্রার ইনসুলিন ত্বকের নিচের টিস্যুতে পাঠিয়ে দেয়।

Leave a Comment
Share
Published by

Recent Posts

ব্রঙ্কাইটিস: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…

5 months ago

ডায়াবেটিস রোগীকে কখন দিতে হয় ইনসুলিন?

ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…

5 months ago

ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায়

সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…

5 months ago

কুকুরে কামড়ালে করণীয় কি

পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…

5 months ago

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কী করণীয়

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…

5 months ago

ব্রেন স্ট্রোক: এই লক্ষণগুলি থাকলে সতর্ক থাকুন

ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…

5 months ago