সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে শরীরে নানা উপসর্গ প্রকাশ পায়, তখনই চিকিৎসার দরকার হয়।
আজ আমরা জানব ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায় ও ইউরিক অ্যাসিড নিয়ে অজানা সব তথ্য।
দুই রকম উপসর্গ আছে।
একটি অ্যাকিউট অন্যটি ক্রনিক।
অ্যাকিউট ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা: আকিউট ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় শরীরের ছোট ছোট অস্থিসন্ধ বা গাঁটগুলি লাল হয়ে ফুলে যায়। রোগী হাঁটতে পারেন না। হঠাৎ এই ধরনের উপসর্গ দেখা যেতে পারে। তার সঙ্গে একটা জ্বর জ্বর ভাব থাকতে পারে। ওষুধের সাহায্যে অ্যাকিউট গাউটের সমস্যার অনেকখানি নিরাময় করা যায়।
ক্রনিক রোগ: অনেক দিন ধরে অ্যাকিউট গাউটে ভুগতে ভুগতে গাঁটের ব্যথা ক্রনিক হেয়ে গেলে তখন তাকে বলা হয় ক্রনিক গাউট। ক্রনিক গাউটে গাঁটের ব্যথা গুলি রোগীকে ভোগাতে থাকে।
কখন নেবেন চিকিৎসকের পরামর্শ?
গাউটের এমনই ব্যথা ওঠে যে রোগী প্রায়শই আপৎকালীন বিভাগে ছুটে যান। অনেকটা দাঁতের ব্যথার মতো অসহনীয় ব্যথা হয় রোগীর।
গাউট নিয়ে কয়েকটি কথা
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে গাঁটে ব্যথা হতো আর তাকে বলা হতো গাউট। গাউট শব্দটি এল কোথা থেকে? এককালে ইংল্যান্ডে শিকারিরা বনে গিয়ে হাঁস শিকার করত ও হাঁসের তন্দুরি বানিয়ে রেড ওয়াইন দিয়ে খেত। এর ফলে তারপরের দিন ওই শিকারিরা নিজের পায়ে হাঁটতে পারত না। তাহলে ডাক-এর মাংসের সঙ্গে ওয়াইন খেলে গাঁট ফুলতে শুরু করতো। এর পরবর্তীকালে পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ইউরিক অ্যাসিডের ক্রিস্টালগুলি গাঁটে জমা হয় ও ফুলে গিয়ে লাল হয়ে যায়। এর ফলে বাড়ে ব্যথা ও কষ্ট। আর সেই কারণেই রোগী হাঁটতে পারেন না। তবে গাঁটে ব্যথা হচ্ছে মানেই যে সেইসময় রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অনেক বেশি থাকবে তার কোনও অর্থ নেই।
সুতরাং ইউরিক অ্যাসিড গাঁটে জমলে তাকে বলা হয় গাউট।
রোগ নির্ণয়
সাধারণত চিকিৎসক রোগীর রোগের উপসর্গ দেখেই রোগটি চিহ্নিত করতে পারেন। এরপর কিছু রোগ নির্ণায়ক পরীক্ষা করাতে দিতে পারেন তিনি।
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা জানতে দেওয়া হয় ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট।
মনে রাখতে হবে আলাদা ব্যক্তির ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড আলাদা রকম সমস্যা নিয়ে উপস্থিত হতে পারে। তবে এই প্রসঙ্গে বলা যায়, ভিন্ন ল্যাবরেটরিতে কিট-এর ভিন্নতার কারণে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও আলাদা রকম বের হতে পারে। এমনিতে সার্বিকভাবে বলা যায় যে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা থাকা উচিত সর্বোচ্চ ৬.৫ থেকে ৭ মিলিগ্রামের মধ্যে।
ইউরিক অ্যাসিড কী?
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা সম্পূর্ণভাবে মেটাবলিক ডিজিজ। আমরা যখন প্রোটিনজাতীয় খাদ্য খাই তখন তার বর্জ্য হিসেবে তৈরি হয় পিউরিন নামে একটি উপাদান।
প্রোটিন জাতীয় খাদ্যে থাকে পিউরিন যা ভেঙে শেষপর্যন্ত পরিণত হয় ইউরিক অ্যাসিডে। এছাড়া আমাদের দেহের কোষগুলির যে অনবরত ভাঙা গড়ার পর্যায় চলছে তার কারণেও শরীরে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। সাধারণত কিডনির মাধ্যমে ইউরিক অ্যাসিড দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। তবে একটা সময় পর রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেরিয়ে গেলে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
কী কী ক্ষতি
অস্থিসন্ধির ক্ষতি: ইউরিক অ্যাসিড ঘন হয়ে ক্রিস্টাল বা কেলাসের আকারে শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে জমা হতে থাকে। এই সমস্যাকে গাউট বলে। ইউরিক অ্যাসিডের এই কেলাসগুলি অস্থিসন্ধির মারাত্মক ক্ষতি করে। দেখা দেয় প্রদাহ ও ব্যথা।
কিডনির ক্ষতি: কিডনিতে ইউরিক অ্যাসিড স্টোন হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। এমনকী কিডনি ফেলিওর হওয়ার আশঙ্কাও দূর করা যায় না।
ত্বকের ক্ষতি: কোনও কোনও ব্যক্তির ত্বকের নীচে ইউরিক অ্যাসিডের কেলাস জমে ক্ষত তৈরি হয়।
টেনডনের সমস্যা: কয়েকটি ক্ষেত্রে হাড় ও টেনডনের সংযোগ স্থলে জমে ইউরিক অ্যাসিডের কেলাস।
রোগীকে নিয়মিত ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। কয়েকমাস অন্তর রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পরীক্ষা করেও দেখা দরকার। আর অতিঅবশ্যই এক্সারসাইজ করুন। এক্সারসাইজ শরীরে সবসময়ই ইতিবাচক ফল দেয়।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
গলব্লাডার স্টোন বলতে কী বোঝায়? বাংলায় গলব্লাডারের অর্থ হল পিত্তথলি। লিভারের সঙ্গে যুক্ত থাকা একটি…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment