যক্ষ্মা বা টিবি রোগের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

Published by

যক্ষ্মা বা টিবি হল একটি অত্যন্ত উচ্চসংক্রমন ক্ষমতা সম্পন্ন রোগ, যা প্রাথমিক ভাবে ফুসফুসকে আক্রমণ করে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২০ সালে ১.৫ মিলিয়ন মানুষ টিউবারকিউলোসিসে মারা গেছেন। সারা পৃথিবীতে যত রোগের কারনে মানুষ মারা যায়, তার কারন হিসাবে টিউবারকিউলোসিস এর স্থান ১৩ নম্বরে। বর্তমানে সংক্রমনজনিত রোগে মৃত্যুর কারন হিসাবে কোভিড ১৯ এর পরই এর স্থান। উন্নয়নশীল দেশগুলিতে টিউবারকিউলোসিস এ আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। সঠিক সময়ে, পরিস্থিতিতে চিকিৎসা হলে যক্ষ্মা বা টিবি কে সারিয়ে তোলা যায় এবং সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে যক্ষ্মা বা টিবি কে প্রতিরোধও করা যায়।

যক্ষ্মা বা টিবি রোগের রোগলক্ষণ

টিউবারকিউলোসিস এর ব্যাকটেরিয়াম হল মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। এই ব্যাকটেরিয়ামের দ্বারা আক্রান্ত হলেও কিছু মানুষ কোনো রোগলক্ষন বুঝতে পারে না। এই পরিস্থিতিকে ল্যাট্যান্ট টি.বি বলে। অ্যাক্টিভ টিবি রোগের সূচনা হওয়ার আগে টি.বি সুপ্ত অবস্থায় বছরের পর বছর থাকে।

সক্রিয় টিবি নানা রকমের রোগলক্ষন তৈরি করে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগলক্ষনগুলি শ্বাসযন্ত্র সংক্রান্ত হয়ে থাকে, তবে শরীরের অন্য অংশকেও আক্রান্ত করে এবং এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে শরীরের কোন অংশে টি.বি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফুসফুস টিবি তে আক্রান্ত হলে যে রোগলক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায় —

  • তিন সপ্তাহেরও বেশি কাশি থেকে যাওয়া
  • কাশির সাথে রক্ত এবং কফ বের হওয়া
  • বুকে ব্যথা

টিবির অন্যান্য রোগলক্ষণ —

  • অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং তার কারন খুঁজে না পাওয়া
  • দুর্বলতা
  • জ্বর
  • কাঁপুনি
  • রাতের বেলায় শরীর ঘেমে ওঠা
  • ক্ষিদে কমে যাওয়া
  • ওজন কমে যাওয়া

এই সমস্ত রোগলক্ষন ছাড়াও টিবি যখন শরীরের অন্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে যায়, তখন যে যে রোগলক্ষনহুলি দেখতে পাওয়া যায়, তা হল—

  • যক্ষ্মা বা টিবি যদি কিডনি কে আক্রান্ত করে, তাহলে কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যায় এবং মূত্রত্যাগের সময় রক্ত নির্গত হয়
  • যক্ষ্মা বা টিবি যদি শিরদাঁড়া কে আক্রান্ত করে, তাহলে পিঠে ব্যথা, শক্ত ভাব, পেশিতে খিঁচুনি, শিরদাঁড়ার গঠনগত সমস্যা, ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়
  • যক্ষ্মা বা টিবি যদি মস্তিষ্কে ছড়িয়ে যায়, তাহলে গা গোলানো ভাব, বমি, বুঝতে ও চিনতে সমস্যা হওয়া, জ্ঞান না থাকা, ইত্যাদি হয়ে থাকে।
যক্ষ্মা বা টিবি তে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কারা সবচেয়ে বেশি বিপদের সম্মুখীন?

যেসব কারণে টিবির ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, সেগুলো হল —

  • ডায়াবেটিস, কিডনির রোগের একদম শেষ পর্যায় এবং কিছু প্রকারের ক্যান্সার
  • অপুষ্টি
  • দীর্ঘদিন ধরে তামাক এবং অ্যালকোহল পান করা
  • HIV বা অন্যান্য রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কে নষ্ট করে দেওয়া রোগ

যেসকল ওষুধ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কে নষ্ট করে দেয়, সেসব ওষুধ সেবন করলেও টি.বিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অর্গ্যান ট্রান্সপ্লান্টের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধগুলোও এই পর্যায়ে পড়ে। এছাড়াও আরও যেসমস্ত রোগের ওষুধ টি.বির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, সেগুলো হল —

  • ক্যান্সার
  • রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস
  • ক্রোহন্স ডিজিজ
  • সোরিয়াসিস
  • লুপাস

WHO এর রিপোর্ট অনুযায়ী টি.বি তে মৃত্যুর ৯০% ই ঘটে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। যেসমস্ত দেশে টিবি  আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি সেইসব স্থানে ভ্রমণও টি.বি তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। এইসব দেশগুলো হল —

  • আফ্রিকার সাহারা অঞ্চল
  • ভারত
  • মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশ
  • চীন এবং অন্যান্য এশিয়ান দেশ
  • রাশিয়ার কিছু অংশ এবং পুরোনো সোভিয়েত ইউনিয়নের কিছু অংশ
  • দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ
  • মাইক্রোনেসিয়া

ইউনাইটেড স্টেটস এর কিছু অংশ যেখানে মানুষের উপার্জন কম, সেখানে সঠিক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান না থাকায়, সেখানকার মানুষেরাও টিবিতে আক্রান্ত হয়।

গৃহহীন মানুষ এবং যেখানে ছোট জায়গায় গাদাগাদি করে মানুষ থাকে, যেমন — জেল, সংশোধনাগার ইত্যাদি জায়গায় থাকা মানুষদের টি.বি তে আক্রান্ত হওয়ার ভীষণ সম্ভাবনা থাকে।

এইচ.আই.ভি এবং টিবি

যাঁরা HIV তে ভুগছেন, তাঁদের টিবি তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই থাকে এবং তাঁরা অধিকাংশ সময়ই টিবি তে মারা যান। WHO এর তথ্য অনুযায়ী HIV রোগীরা টি.বিতে আক্রান্ত হয়েই সবচেয়ে বেশি মারা যান।

HIV তে আক্রান্ত কোনো মানুষের যদি ল্যাটেন্ট টিবি, অর্থাৎ টি.বি সুপ্ত অবস্থায় থাকে, এবং তার চিকিৎসা না হয়, তাহলে এটি থেকেই অ্যাক্টিভ  টিবি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। সেকারণেই যাঁরা HIV তে আক্রান্ত তাঁদের প্রায়শই টিবি পরীক্ষা করে দেখা দরকার।

HIV তে আক্রান্ত মানুষেরা টি.বি থেকে নিজেরদের সুরক্ষিত রাখতে কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন—

  • নিয়মিত টি.বির পরীক্ষা করা
  • চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে HIV এর ওষুধ নিয়মিত সেবন করা
  • টিবি তে আক্রান্ত মানুষের খুব কাছে না যাওয়া
  • ধূমপান বন্ধ রাখা। ধূমপান টিবি তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এবং HIV ও টিবির চিকিৎসায় শরীরের সুস্থ হওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়
  • উচ্চপুষ্টি সম্পন্ন এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস তৈরি করতে হবে, যাতে HIV থেকে রোগের জটিলতা বৃদ্ধি না পায় এবং শরীরে ওষুধের  শোষণ সঠিকভাবে হয়।
  • রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কে বজায় রাখতে প্রতিদিন কিছু এক্সারসাইজ করা

যক্ষ্মা বা টিবি কিভাবে হয়?

মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক ব্যাকটেরিয়াম এর কারনে টি.বি হয়। টিবির অনেকগুলি স্ট্রেন আছে এবং এর মধ্যে কিছু স্ট্রেন ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।

টিবির ব্যাকটেরিয়া জলের বিন্দুর আকারে (droplet) বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। একবার এই ড্রপলেটগুলো বাতাসে মিশে গেলে এর কাছাকাছি যে আসবে তার শরীরে এগুলো শ্বাসগ্রহনের সাথে সাথে প্রবেশ করবে। টিবি আক্রান্ত মানুষ হাঁচি, কাশি, কথা বলা, গান গাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে।

যাঁদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা উচ্চমানের তাঁরা এই ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসলেও তাঁদের ভেতর রোগলক্ষন দেখতে পাওয়া যায় না। একেই ল্যাটান্ট বা ইনঅ্যাক্টিভ টি.বি ইনফেকশন বলা হয়। পৃথিবীর জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ এই ল্যাটান্ট টি.বি তে আক্রান্ত। ল্যাটান্ট টিবি সংক্রামক নয়, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি অ্যাক্টিভ টিবি তে পরিনত হতে পারে এবং তা তখন সংক্রামক।

যক্ষ্মা বা টিবির রোগ নির্নয়

স্কিন টেস্ট, ব্লাড টেস্ট বা এই দুই প্রকারের টেস্টের মাধ্যমেই চিকিৎসক রোগ নির্নয় করতে পারেন। আপনার দুই প্রকারের পরীক্ষারই প্রয়োজন হতে পারে, যদি —

  • স্কিন টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ হয়
  • স্কিন টেস্ট থেকে ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসে

ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসতে পারে, যদি আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক ভাবে কাজ না করে এবং যদি টেস্ট করারা সময় থেকে আপনার টি.বির সংস্পর্শে আসার সময়কাল আট সপ্তাহের কম হয়ে থাকে।

স্কিন টেস্ট

আপনি টিবি ব্যাকটেরিয়া তে আক্রান্ত কিনা তা বোঝার জন্য আপনার চিকিৎসক পিউরিফায়েড প্রোটিন ডেরিভেটিভ (PPD) পরীক্ষা করবেন।

এই পরীক্ষার জন্য চিকিৎসক আপনার ত্বকের একদম উপরিভাগের নীচে ১ মিলিলিটার PPD (খুব অল্প পরিমানে প্রোটিন) ইনজেক্ট করবেন। এর দুই থেকে তিন দিন পরে আপনাকে আবার চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, পরীক্ষার ফলাফল কু হয়েছে তা দেখানোর জন্য।

ত্বকের যে জায়গায় PPD ইঞ্জেক্ট করা হয়েছিল, সেখানে যদি ৫ মিলিমিটারের থেকে বড় উঁচু,  ফোলা দেখতে পাওয়া যায়, তবে তাকে পজিটিভ রেজাল্ট বলে ধরা হয়। রোগীর স্বাস্থ্য, মেডিক্যাল হিস্ট্রি ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে এই ফোলা অংশটার পরীক্ষা করা হয় এবং তা ৫ মিলিমিটার থেকে ১৫ মিলিমিটার পর্যন্ত দেখা হয়ে থাকে। ত্বকের উপরের প্রতিক্রিয়া ১৫ মিলিমিটার এর অধিক হলে শারীরিক অবস্থা যাই হোক না কেন তা পজিটিভ রেজাল্ট হিসাবেই ধরা হয়।

স্কিন টেস্ট যদিও নির্ভুল হয় না। এই পরীক্ষা শুধু বলতে পারে, আপনার শরীরে টি.বি ব্যাকটেরিয়া আছে কি না। কিন্তু টিবি ব্যাকটেরিয়া অ্যাক্টিভ কি না তা বলতে পারে না। এছাড়াও কিছু মানুষের টিবি থাকলেও টেস্ট রেজাল্টে তা বেরোয় না, আবার কারোর টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ হলেও শরীরে টি.বি ইনফেকশন থাকে না। যারা এই টেস্টের কিছুদিন আগেই টি.বি ভ্যাক্সিন নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ হলেও বাস্তবে টি.বি ইনফেকশন থাকে না।

ব্লাড টেস্ট

আপনার চিকিৎসক স্কিন টেস্টের পরই ব্লাড টেস্ট করতে দেবেন। কখনো কখনো শারীরিক অবস্থা বিচার করে আগেই ব্লাড টেস্ট করতে দেওয়া হয়। স্কিন টেস্টের মতোই ব্লাড টেস্টও বলতে পারেনা যে আপনার টিবি ইনফেকশনটি অ্যাক্টিভ কি না।

চেস্ট এক্স–রে

যদি আপনার ব্লাড টেস্ট এবং স্কিন টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ আসে, তাহলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে চেস্ট এক্স রে করতে বলবেন, ফুসফুসে ছোট ছোট স্পট (দাগ) তৈরি হয়েছে কি না দেখার জন্য। এই দাগগুলো নির্দেশ করে যে, আপনার শরীরে টিবি ইনফেসশন আছে এবং আপনার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাকটেরিয়াগুলোকে আলাদা করার চেষ্টা করছে।

চেস্ট এক্স–রে এর রেজাল্ট নেগেটিভ হলে তা সুপ্ত অবস্থায় থাকা টিবিকেও নির্দেশ করে। আবার টেস্ট রেজাল্ট সঠিক আসেনি এমনও হতে পারে। চিকিৎসক অন্য টেস্ট করতে দেবেন আবার।

যদি টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ হয় তাহলে চিকিৎসক অ্যাক্টিভ টিবির চিকিৎসা শুরু করবেন এবং তা না হলে ল্যাটান্ট টি.বির চিকিৎসা শুরু করবেন। এর ফলে টি.বি ব্যাকটেরিয়া ভবিষ্যতে আর সক্রিয় হবে না।

অন্যান্য পরীক্ষা

আপনার চিকিৎসক আপনার স্পুটাম পরীক্ষাও করতে বলবেন। স্পুটাম হল ফুসফুসের অভ্যন্তরীণ, সেটিকে ঘিরে রাখা মিউকাস লেয়ার। আপনার ফুসফুসের একদম ভেতরের দিক থেকে এই মিউকাস পরীক্ষার জন্য নেওয়া হবে। যদি টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ হয়, তাহলে আপনি অন্যদের ভেতর টি.বি সংক্রমনে সমর্থ। আপনাকে তখন থেকে একটি বিশেষ মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, যতদিন পর্যন্ত চিকিৎসা করে আপনার স্পুটাম রেজাল্ট নেগেটিভ আসছে।

এইসমস্থ টেস্টের রেজাল্ট যদি সঠিক না হয়, তাহলে চিকিৎসক আপনাকে চেস্টের সি.টি স্ক্যান, ব্রঙ্কোস্কোপি, লাঙ বায়োপসি করতে বলবেন।

যক্ষ্মা বা টিবি রোগের চিকিৎসা কিভাবে হয়?

অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনই এক বা দুই সপ্তাহ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করলে ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু টিউবারকিউলোসিস ভিন্ন। অ্যাক্টিভ টি.বিতে আক্রান্ত রোগীকে ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত কম্বিনেশন ওষুধ, অর্থাৎ দুই বা তার বেশি ওষুধ  খেতে হবে। রোগী যদি চিকিৎসা ও ওষুধের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি পূর্ণ না করেন, তাহলে টি.বি ইনফেকশন ফিরে আসার খুবই সম্ভাবনা আছে। যদি ইনফেকশন আবার ফেরত আসে, তাহলে তা পূর্বে ব্যবহার করা ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে, তাই এক্ষেত্রে চিকিৎসা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। টিবির চিকিৎসার কমন কম্বিনেশন হল —

  • আইসোনিয়াযিড
  • ইথামবুটল (মায়ামবুটল)
  • পাইরাযিনামাইড
  • রিফামপিন (রিফাডিন, রিমাকটেন)
  • রিফাপেনটাইন (প্রিফটিন)

এইসমস্থ ওষুধগুলো রোগীর লিভারে খারাপ প্রভাব ফেলে ; ফলে যাঁরা টিবির ওষুধ খাচ্ছেন তাঁদের লিভার ইঞ্জুরির রোগলক্ষনগুলো খেয়াল রাখতে হবে —

  • ক্ষিধে চলে যাওয়া
  • মূত্রের রঙ গাঢ় হওয়া
  • তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে
  • অকারন গা গুলানো এবং বমিভাব
  • জণ্ডিস
  • পেটে ব্যথা

ভ্যাক্সিনেশন

যেসব দেশে টিবি ইনফেকশন খুব বেশি পরিমানে ছড়িয়ে আছে, সেখানে চিকিৎসক BCG ভ্যাক্সিন ব্যবহার করেন। এই ভ্যাক্সিন প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে বাচ্চাদের ওপর বেশি কার্যকরী হয়।

       চিকিৎসকের নির্দেশ মতো সমস্ত ওষুধ নিয়মিত নিলে টিবির চিকিৎসা এবং সেখান থেকে সুস্থতা সম্ভব।

টিবির সাথে অন্যরোগ থাকলে অ্যাক্টিভ টিবির চিকিৎসা করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। সাধারণত খুব দ্রুত রোগ ধরা পড়া এবং সসম্পূর্ণ চিকিৎসা কম্পলিট করলে টিবি থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি থাকে।

Anshula Banerjee

Hello, I am Anshula Banerjee, completed my post-graduation degree in English, along with Bachelor of Education. I live at Nadia. I am a voracious reader in various fields of knowledge that may help the readers to satisfy their urge specially in the area of health and wellness.

Leave a Comment
Share
Published by

Recent Posts

ব্রঙ্কাইটিস: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…

5 months ago

ডায়াবেটিস রোগীকে কখন দিতে হয় ইনসুলিন?

ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…

5 months ago

ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায়

সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…

5 months ago

কুকুরে কামড়ালে করণীয় কি

পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…

5 months ago

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কী করণীয়

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…

5 months ago

ব্রেন স্ট্রোক: এই লক্ষণগুলি থাকলে সতর্ক থাকুন

ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…

5 months ago