হোয়াইট ডিসচার্জ বা সাদা স্রাব হল মহিলাদের একটি সাধারণ সমস্যা যা মেন্সট্রুয়াল সাইকেল এবং প্রেগন্যান্সিকে প্রভাবিত করে। তবে এটাকে অনেকক্ষেত্রে ভাল লক্ষণ হিসেবে ধরা যেতেই পারে। সহজভাবে বলা যায়, এটি মহিলাদের যোনিপথের টিস্যুগুলোকে পিচ্ছিল এবং ভিজিয়ে রাখে, যা মূলত দেখা যায় হরমোন পুনরুৎপাদন এর কারনে। এর গন্ধ যদি খারাপ না হয় বা এর ফলে অন্যান্য শারীরিক উপসর্গ দেখা না যায়, তাহলে এইধরনের সাদা ডিসচার্জ ক্ষতিকারক নয়। সাদা স্রাব যোনিপথের pH এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
থকথকে সাদা স্রাব
ঋতুচক্রের আগে বা পরে পাতলা, সাদা রঙের স্রাব দেখা যেতে পারে যার ঘনত্ব অনেকটা ডিমের সাদা অংশের মত হয়ে থাকে। অভিউলেশন (Ovulation) অর্থাৎ যে সময় ওভারি থেকে ডিম্বানু মুক্ত হয়, তখন এই ধরনের পাতলা স্রাব পরিলক্ষিত হয় অনেকসময় প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকে অনেকের ক্ষেত্রে এইধরনের স্রাব তৈরি হতে দেখা যায়, ডাক্তাররা একে স্বাভাবিক বলেই গন্য করে থাকেন। আসলে সহজ কথায়, প্রেগন্যান্সির ৯ মাসে এইধরনের ডিসচার্জ হরমোন ভারসাম্যহীনতার জন্য হয়ে থাকে।
পিরিয়ডের আগে ডিসচার্জ
কিছু মহিলাদের ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডের আগে সাদা স্রাব হতে দেখা যায়, এবং কখনো তার রঙ সামান্য হলদেও হয়ে থাকে, একে বলা হয় লিউকোরিয়া। এটিকে ঋতুস্রাবের সংকেত হিসেবেও ধরা হয়। যখন শরীরে প্রজেসটেরন এর মাত্রা বেড়ে যায় তখন স্রাবের মধ্যে মিউকাস থাকতে পারে। অনেকসময় পিরিয়ডের আগে সাদা স্রাব প্রেগন্যান্সির সঙ্কেত দেয়। জন্ম নিয়ন্ত্রনের ফলে হরমোনাল ইমব্যালান্স হয়, এর কারনেও সাদাস্রাব বেশি পরিমানে হতে পারে। ইষ্ট ইনফেকশন থেকেও অনেকসময় পুরু এবং সাদা রঙের ডিসচার্জ হতে পারে। এরফলে অনেকসময় যোনিদ্বারে চুলকানি বা জ্বালা অনুভত হয়।
সাদা এবং জমাটবাধা
যখন সাদা, খানিকটা পনিরের মত দেখতে জমাটবাধা ডিসচার্জ হতে দেখা যায়, এটা মুলত ইষ্ট ইনফেকশনের কারণে হয়ে থাকে। সাধারনত নিম্নাঙ্গের pH Balance, ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের হাত থেকে কোনো ইনফেকশন হওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু কিছুসময় এই ভারসাম্যের তারতম্য ঘটে অর্থাৎ সমান থাকেনা, এই সময় সংক্রমন বেড়ে যায়। Candida albicans নামক একধরনের ফাঙ্গাস আছে যার কারণেও সংক্রমন হতে পারে।
আঠালো এবং পুরু
ওভিউলেটিং না হলেও ভ্যাজাইনা থেকে তরল নিঃসৃত হয় এবং এর গঠন পুরু আর আঠালো হয়। সাধারণত বলা হয়, এই ডিসচার্জ শুক্রান্যুকে সারভিক্স হয়ে ইউটেরাসে যেতে বাধা দেয়। এটি ইনফেকশন প্রতিরোধ করে, অনেকসময় পিরিয়ডের পরে চুলকানি হয়ে থাকে, এই তরল সেটা নিয়ন্ত্রণ করে।
সাধারণত সাদাস্রাব কে ক্ষতিকারক বলে মনে করা হয়না, তবে সময়বিশেষে এর মাত্রা বেশি হলে এবং অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই অবহেলা করা উচিত নয়, যেমনঃ
সাধারনভাবে হোয়াইট ডিসচার্জ ক্ষতিকারক বা সমস্যাসৃষ্টিকারী রোগ নয়, তবে যদি কোন অস্বাভাবিক জিনিস যেমন জ্বর, পেটে ব্যাথা, যোনীদ্বারে চুলকানি বা জ্বালা তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন। ডাক্তাররা মৌখিকভাবে সমস্যা গুলো শুনে থাকেন, কিন্তু তিনি যদি সিরিয়াস কিছু মনে করেন সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরীক্ষার করার কথা বলে থাকেন। যোনীতে কোনোরকম ইনফেকশন যাতে না হয় সেজন্য সুতির আন্ডারগারমেন্ট পরা উচিত। খুব চাপা প্যান্ট বা ট্রাউসার পরা উচিত নয়। যতটা সম্ভব গোপনাঙ্গ পরিষ্কার রাখা উচিত, তবে ভাল গন্ধযুক্ত স্প্রে বা টয়লেট পেপার ব্যাবহার করা উচিত নয়, কারণ অনেকের ক্ষেত্রে তা যথাযোগ্য হয়না এবং ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনেকসময় বহু যৌনসঙ্গী ও অনিয়ন্ত্রিত যৌনসঙ্গমের ( Sexually transmitted infections বা STI) কারণে ইষ্ট ইনেফেকশন হতে পারে, যার থেকে এই ধরনের ডিসচার্জ দেখা দিতে পারে, তাই প্রতিরোধক বা কন্ডম ব্যাবহার করা উচিত।
ইষ্ট ইনফেকশন হলে অ্যান্টিফাংগাল মেডিকেশনের দরকার পড়ে অর্থাৎ যোনীদ্বারে ক্রিম বা জেল লাগাতে হয়। ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস এর চিকিৎসা করা হয় অ্যান্টিবায়টিক ওষুধ বা ক্রিমের মাধ্যমে। ট্রিকমনিয়াসিস এর চিকিৎসা করা হয় মেট্রোনিডাজল বা টিনিডাজল ওষুধের মাধ্যমে।তবে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসকেরা যে ওষুধ যতদিন ব্যাবহার করতে বলবেন ঠিক ততদিনই ব্যাবহার করা উচিৎ, মাঝপথে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করলে বিপদ আরও বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment