পেটের মেদ ও শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর উপায় এর কথা ভাবছেন? রইল 11 টি ঘারোয়া টিপস

Published by

শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর উপায় খুঁজছেন? ভাবছেন ওজন কমিয়ে কি ভাবে দেখতে একটু স্লিম এন্ড ফিট হওয়া যায় ? বেশ তাহলে এই প্রবন্ধটি আপনার জন্য। তবে একটা কথা জেনে রাখুন, দেহের অতিরিক্ত ওজন বা মেদ শুধু যে সৌন্দর্য্যহানি ঘটায় তা নয়, অতিরিক্ত মেদ স্বাস্থ্যেহানিও ঘটায়, দেখা দিতে পারে হরমোন ঘটিত সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, এমন কি স্ট্রোক এর মত প্রাণঘাতী রোগ। তাই আমরা সকলেই দেহের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমাতে খুবই চিন্তত। কিন্তু এই ব্যস্ত শহরে সংসার বা অফিস সামলে  নিজের জন্য সময় বের করে,  ডায়েট, ব্যায়াম  করার মতো সময় কোথায়? তাই ওজন কমাতে অনেকে আবার সকালের খাবার না খেয়ে বহুক্ষণ উপবাসে কাটান, কিন্তু জানেন কি রাতে  অনেক ক্ষণ উপবাসের পর সকালের খাবার টা জরুরি, খুব বেশি ক্ষণ না খেয়ে থাকলে ওজন তো কমবেই না বরং গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে, কখনো আলসারের মতো চিরস্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। আবার অনেকে আছেন ওজন কমাতে ডায়েট থেকে সম্পূর্ণ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্যকে বাদ দিয়ে শুধু প্রোটিন জাতীয় খাদ্যকে সঙ্গী করে নেন, কিন্তু তাতে বিপদ আরো মারাত্মক দেখা দিতে পারে কিডনি জনিত সমস্যা। অনেকে আবার জিমে অতিরিক্ত এক্সারসাইজ করছেন ওজন কমাতে।  অনেকে আছেন ওজন কমানোর জন্য সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করছেন কিন্তু জানেন কি ঘরের তৈরি কিছু খাবার খেয়েও সুস্থ উপায়ে ওজন কমানো যায় ? আসুন আজ সে বিষয়ে কিছু তথ্য সংগ্রহ করি।

আদা ও জিরা আমাদের রান্না ঘরে থাকা মশলা সম্ভারের মধ্যে খুব পরিচিত মশলা হলো আদা ও জিরে । আদা ও জিরে শুধু যে রান্নার স্বাদ অটুট রাখে তাই নয়, এই দুই মশলায় আছে বহুগুণ। প্রতি দিন সকালে যদি আদা ও জিরে একটু বয়েল করে তাতে এক চামচ পাতি লেবুর রস মিশিয়ে পান করা যায় তাতে দেহের অতিরিক্ত চর্বি গলবে খুব তাড়াতাড়ি। এবং ওজন হবে সঠিক।

লিফট ব্যবহার না করে, সিড়ি দিয়ে উঠুন ব্যস্ত জীবনে সত্যিই আমাদের হাতে সময় খুব কম । প্রতিদিন জিমে গিয়ে ব্যায়াম করার মতো সময় আমাদের হাতে নেই। তাতে কি দৈনিক ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট যদি সময় বের করে একটু হাঁটা চলা করা যায়, কিংবা বিকালে যদি ছাদে হাঁটা যায় তবে ই বা কম কিসের? যিনি অফিসে কর্মরত আছেন ব্যায়াম করার সময় নেই,  তাকে অফিসে লিফট ব্যবহার না করে , সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে হবে, বা অফিস থেকে ফেরার পথে কিছুটা রাস্তা হেঁটে বাড়ি ফিরতে হবে। এভাবে মেনে চলতে পারলে অনেক টা ক্যালরি বার্ন করা সম্ভব।

খাবারের পরিমাণ একটু কমিয়ে ফেলুন ওজন কমাতে পছন্দের খাবার ভাত কি একদম ছেড়ে দেবেন?  শুধু রুটি খেয়ে থাকতে হবে? না  একদম নয়। ভাত থেকে যে পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়  ,সেই সমপরিমাণ ক্যালরি রুটি থেকে পাওয়া যায়। শুধু মনে রাখতে হবে যে বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা চলবে না । ৩০ গ্রাম আটা থেকে তৈরি রুটি, ১ কাপ ভাতের সমান ক্যালরি দিয়ে থাকে। তাই যখন ভাত বা রুটির গ্রহণ করতে হবে সেই পরিমান দেখে নিতে হবে।

খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক থাকুক প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটু বেশি পরিমাণে সবুজ শাক রাখতে হবে। ১০০ g সবুজ শাক থেকে আমরা ৩.৫ g প্রোটিন পেয়ে থাকি। কোনরকম ফ্যাট থাকে না,

এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ লবণে পরিপূর্ণ তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক থাকলে অনাসায়ে খাদ্যে ফ্যাট র পরিমান কম করা যায়। ও ওজন কমানোর পক্ষে সহজলভ্য হয়ে যায়।

প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি খাওয়া অভ্যেস করুন সকাল ও সন্ধ্যার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি। কারণ ফল ও সবজি তে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ লবণ যা দেহের মেটাবোলিজম বাড়িয়ে তোলে, স্বাভাবিক ভাবেই ফ্যাট জমতে পারে না।

চর্বি জাতীয় মাংস বাদ দিন খাদ্য তালিকা থেকে চর্বি জাতীয় মাংস বাদ দিয়ে রাখতে হবে কম চর্বিযুক্ত চিকেন। এবং রান্না করতে হবে কম তেলে।

মিষ্টি জাতীয় খাবারকে না বলুন চিনি বা মিষ্টি শর্করা জাতীয় খাবার। অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার দ্রুত ফ্যাট তৈরি করে। তাই  প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে চিনি, মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।

জল খান বেশী করে খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন পরিমাণ মতো জল খেলে শরীর আর্দ্র থাকে। এর ফলে ডিহাইড্রেশন হয় না। কম ঘুমের সমস্যা, ঝিমানি ভাব, রক্তচাপ কমে যাওয়া এই সমস্যা দূর হয় পরিমিত জল পান করলে। এবং সে জল কে হতে হবে ঈষৎ উষ্ণ।কারণ ঈষৎ উষ্ণ জল পেশী শিথিল করে খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে।যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই জল পান করবেন।

ওজন কমানের জন্য জল গুরুত্বপূর্ণ

খাবার খাওয়ার সময় জল নয় খাবার খাওয়ার ঠিক পরে কখনই জল পান করা উচিত নয়। কারণ জল পাচক রসকে খাবার হজমে বাধা দেয়, ফলে ঠিক মতো খাবার হজম না হয়ে, শরীরে ফ্যাট হিসাবে জমে ওজন বাড়ায়। তাই জল পান করতে হবে খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে ও খাবার শেষ হওয়ার ৩০ মিনিট পরে।

৯০° কোনে চেয়ারে বসুন অনেক সময়  বসে থাকার ধরন পেটের মেদ বাড়ায়। যারা অফিসে বা ঘরে বহুক্ষণ চেয়ারে পেট কুজো করে বসে এক টানা কাজ করে, তাদের তলপেট খুব ভারী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাদের বসতে হবে ৯০° করে। এবং প্রতি ১  ঘণ্টা পর পর একটু উঠে হেঁটে চলে বেড়াতে হবে।

রাত জাগা বন্ধ করুন অনেকেই মনে করেন কম ঘুম ওজন কমাতে উপযোগী, কিন্তু ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ঘুম কম হলে খিদে পাওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়, ফলে এক্সট্রা ক্যালরি দেহের মধ্যে প্রবেশ করে যা ওজন বাড়ায়। এছাড়াও পরিমিত ঘুম খাবার হজমে সাহায্য করে, তাই রাত জেগে থাকা চলবেনা, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হবে।

Promita Saha

Hello, myself Promita Saha, a nutritionist, and health blogger at Health Inside. Always deal with food and ideal health, help people to reach their own perfect health.

Leave a Comment
Share
Published by

Recent Posts

ব্রঙ্কাইটিস: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…

4 months ago

ডায়াবেটিস রোগীকে কখন দিতে হয় ইনসুলিন?

ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…

4 months ago

ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায়

সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…

4 months ago

কুকুরে কামড়ালে করণীয় কি

পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…

4 months ago

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কী করণীয়

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…

4 months ago

ব্রেন স্ট্রোক: এই লক্ষণগুলি থাকলে সতর্ক থাকুন

ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…

4 months ago