শিশুরা কেন ঘন ঘন হেঁচকি তোলে ও এর থেকে মুক্তির উপায় কী ?

Published by

শিশুদের ঘন ঘন হেঁচকি ওঠা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ডায়াফ্রামের সংকোচন এবং ভোকাল কর্ড দ্রুত বন্ধ হওয়ার কারণে শিশুর হেঁচকি হয়। কিন্তু কখনও কখনও শিশুর ক্রমাগত হেঁচকি হতেই থাকে, কিছুতেই থামতে চায় না। আসলে, আমরা অনেক সময় দেখি আমাদের নবজাতকটি কিছু খেলে বা অনেক সময় বিনা কারণেও হেঁচকি তুলতে থাকে। এর জন্য স্বাভাবিক ভাবেই আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুরা কেন এই হেঁচকি তোলে এবং এর থেকে নিষ্কৃতির উপায় কী।

যদিও হেঁচকি একটি বিরক্তিকর জিনিস তবে এটি আপনার শিশুর বিকাশের জন্য উপকারী হতে পারে। ২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল) এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে হেঁচকি মস্তিষ্কে সংকেতগুলির তরঙ্গ পাঠায় যা আপনার বাচ্চাকে তাদের শ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

শিশুরা কেন ঘন ঘন হেঁচকি তোলে ?

শ্বাসযন্ত্রের পেশী মধ্যচ্ছদায় জ্বালা ও খিঁচুনির সৃষ্টি হলে হেঁচকি তৈরী হয়। যেহেতু একটি শিশুর পেট ও ধড় ছোট, তাই তাদের পেট যখন সম্পূর্ণরূপে ভরে যায় খাবারগুলি তাদের মধ্যচ্ছদায় ধাক্কা দেয় এর ফলে তাদের হেঁচকির শুরু হয়। এছাড়া আপনার শিশুর খাবার গিলে ফেলা এবং শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে একসঙ্গে না চলার কারণে তারা শ্বাস নেওয়ার সাথে সাথে গিলে ফেলার চেষ্টা করতে পারে এবং এর ফলে তাদের শ্বাসনালী প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলেও তারা হেঁচকি তোলে।

শিশুরা কীভাবে হেঁচকি তোলা থেকে মুক্তি পেতে পারে ?

যদিও হেঁচকি নবজাতকদের জন্য উপকারী, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষভাবে বিরক্তিকর হতে পারে। আপনার শিশুকে স্তন্যপান করালে  বা তাদের বোতলে দুধ খাওয়ালে অনেক সময় তারা এর থেকে মুক্তি পেতে পারে, কিন্তু যদি তারপরেও তাদের হেঁচকি উঠতে থাকে, তাহলে তাদের শান্ত জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবুন। সব সময় মনে রাখতে হবে নবজাতকরা যখন জেগে থাকে তখন তারা শব্দ বন্ধ করতে পারে না। তাই তাদের জন্য বড় ভাইবোন, পোষা প্রাণী এবং টিভি থেকে দূরে একটি শান্ত একটি ঘর বা নার্সারি তৈরী করার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে লাইটগুলোও কম করে দিন, এর ফলে আপনার শিশু হেঁচকির সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত হয়ে যাবে। আবার ঘন ঘন হেঁচকি রিফ্লাক্সের একটি চিহ্নও হতে পারে, এবং এগুলি খাদ্যনালীর খিঁচুনি এবং পেটে অতিরিক্ত বাতাসের কারণে হতে পারে।

তাই, খাওয়ানোর পরপরই শিশুর সঙ্গে খেলা করা এড়িয়ে চলুন। খাওয়ানোর পর ২০-৩০ মিনিট আপনার শিশুকে সোজা বা খাড়া অবস্থায় রাখুন। খাড়া অবস্থায় থাকাকালীন শিশুর পিঠে আলতো করে মালিশ করুন ঢেকুর তোলার জন্য। এটি খাওয়ার সময় গ্রাস করা বায়ুকে বের করে দেয়।

যদি আপনার ছোট বাচ্চারও রিফ্লাক্সের অন্যান্য লক্ষণ থাকে – যেমন বমি করা, থুথু ফেলা, খেতে অস্বীকার করা, বিরক্তি, কাশি তাহলে অবিলম্বে তাকে আপনার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান। নবজাতকের হেঁচকি থেকে মুক্তি পেতে তারা আপনাকে সাহায্য করবেন।

Soumita Chakraborty

Hi, I'm Soumita Chakraborty, a professional content researcher dealing in Healthcare or wellness websites & television channels for the last 6years. The contents written by me are trustworthy, most updated, accurate, informative and backed by cited, reputable sources. Consisting well-performing keywords to improve search engine optimization.

Leave a Comment
Share
Published by

Recent Posts

ব্রঙ্কাইটিস: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…

4 months ago

ডায়াবেটিস রোগীকে কখন দিতে হয় ইনসুলিন?

ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…

4 months ago

ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায়

সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…

4 months ago

কুকুরে কামড়ালে করণীয় কি

পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…

4 months ago

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কী করণীয়

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…

4 months ago

ব্রেন স্ট্রোক: এই লক্ষণগুলি থাকলে সতর্ক থাকুন

ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…

4 months ago