একজিমা, এক প্রকার চর্মরোগ। যার অন্য নাম হল অ্যাটোপিক ডারমাটাইটিস, শরীরের ভিতর থেকে অথবা বাইরে থেকে কোন বস্তু যখন ত্বকের উপর প্রভাব ফেলতে থাকে, তখন দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতি-সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে ত্বকের উপরে এই রোগ অর্থ একজিমার সৃষ্টি হয়। যে বস্তুগুলি দেহের বাইরে থেকে শরীরে প্রভাব ফেলে সেগুলির মধ্যে আছে রাসায়নিক পদার্থ এবং ড্রাগস। দেহের ভিতর থেকে যেগুলি প্রভাব ফেলে সেগুলি হল বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিজেন এবং হ্যাপটেনস (এক ধরণের অ্যান্টিজেন)।
একজিমার সাধারণ প্রকারটি হলো অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস। এছাড়াও যে তিনপ্রকারের একজিমা লক্ষ্য করা যায় তা হলো :
কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস (Contact Dermatitis)
কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস মূলত হয় কোনো পদার্থের (কিছু ধাতব অথবা চামড়া জাতীয় বস্তু) সংস্পর্শে আসলে৷ জ্বালা-যন্ত্রণা, চুলকানি, রেডনেস ইত্যাদি দেখা যায়। ইরিট্যান্ট শরীর থেকে দূরীভূত হলে ইনফ্ল্যামেশন ও দূরীভূত হয়৷
ডিস-হাইড্রোটিক ডার্মাটাইটিস (Dyshidrotic Eczema)
ডিস-হাইড্রোটিক ডার্মাটাইটিস আঙুল, হাতের চেটো অথবা পায়ের পাতায় জলে ভরা গুটি বা ফুস্কুড়ির মতন৷ এর কারণে চুলকানি, খসখসে, লাল, ফাটা ত্বক হতে দেখা যায়।
নাম্মিউলার ডার্মাটাইটিস (Nummular Dermatitis)
নাম্মিউলার ডার্মাটাইটিসের সমস্যা সাধারণত শীতকালে হয়।এর ফলে ত্বকের উপর শুষ্ক ও গোলাকার প্যাচ সৃষ্টি হয়। এটি সাধারণত পায়ের পাতার উপরিভাবে দেখা যায়। মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের উপর এই রোগের প্রকোপ বেশি লক্ষ্য করা যায়৷
একজিমার বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। এর মধ্যে কতগুলি আছে যা হওয়ার কিছু পরিবেশগত কারণ আছে। আবার কতগুলি আছে যেগুলি আরও জটিল। সব ধরণের একজিমার ক্লিনিকাল লক্ষণ এবং উপসর্গ একই রকমের শুধু ফারাক থাকে সময়কালের, অর্থাৎ ক্ষণস্থায়ী (তীব্র) বা দীর্ঘস্থায়ী। যেমনঃ
অ্যাটোপিক একজিমা বাচ্চাদের মুখে এবং মধ্যশরীরে হয়। যেহেতু বাচ্চারা সংক্রামিত জায়গায় আঁচড়াতে থাকে তাই চামড়া উঠে যায় এবং লাল হয়ে যায়। অ্যাটোপিক একজিমাতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।প্রথম দেখা দেয় গালে। বাচ্চাদের ফুসকুড়ি গুলি দেখা যায় হাঁটুর পিছনে, কনুইয়ের সামনে, কব্জিতে এবং গোড়ালিতে। অ্যাটোপিক একজিমা কখনও কখনও জননেন্দ্রিয়তেও হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে, একটি হাল্কা ধরণ লক্ষ্য করা যায় এবং চামড়া শুষ্ক হয়ে উঠে যায়; এগুলি হয় হাতে, চোখে, শরীরের ভাঁজে এবং স্তনাগ্রে।
এছাড়াও অন্যান্য প্রকারের একজিমার ক্ষেত্রে
অনেকক্ষেত্রে মানবদেহের বিশেষ কোনো অংশে প্রোটিনের অস্বাভাবিক রেসপন্স থেকে একজিমার সৃষ্টি হয়।
একজিমা দেখা দিলে মানবদেহের ইমিউন সিস্টেম দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করার ক্ষমতা হারায়, যার ফলে ইনফ্ল্যামেশনের সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও কিছু কারণ আছে যার জন্য একজিমার উপসর্গ দেখা দেয়,যেমনঃ
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একটি বড় ভয়ের কারণ থেকে যায় অ্যাজমা বা হে ফিভারের। একজিমার সমস্যা বাড়তে থাকলে প্রায়শই বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পাল্লা দিয়ে বাড়ে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে (বয়স ৩০ এর কম) এমনটা হতে পারে, তবে তার সম্ভাবনা তুলনামূলক অনেক কম থাকে৷
নির্দিষ্ট কোনো পরীক্ষা নেই একজিমা নির্ণয় করার জন্য। ডাক্তার রা সাধারণত লক্ষণ গুলি দেখেই সিদ্ধান্ত নেন৷ কখনও কখনও অ্যালার্জেন প্রয়োগ করে একটি প্যাচ টেস্ট করা হয় একজিমা কিনা নির্ধারণের জন্য।
ডাক্তাররা ওষুধ প্রয়োগের সাথে সাথে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে বলেন একজিমা থেকে সেরে ওঠার জন্য৷
ওষুধের প্রয়োগ
সংযত জীবনযাত্রা
মনে রাখবেন, একজিমা থেকে কখনও পুরোপুরি সেরে ওঠা যায় না, শুধুমাত্র উপসর্গ গুলি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সঠিক চিকিৎসা হলে৷
কিছু জিনিস মেনে চললে এই রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা কম থাকে। যেমনঃ অতিরিক্ত ঘাম হতে না দেওয়া, স্ট্রেসম্যানেজমেন্ট এবং পর্যাপ্ত ঘুম। এছাড়াও অতিরিক্ত ক্ষার জাতীয় সাবান ডিটারজেন্ট ব্যবহার না করা। খসখসে বা সিন্থেটিক কাপড়ের ব্যবহার কমানো, বেশি ঠান্ডায় না থাকা। নিয়মিত ব্যবহার করুন ময়েশ্চারাইজার, ত্বককে কোনোভাবেই শুষ্ক হতে দেবেন না।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment