যখন, নিয়মিত মেনস্ট্রুয়াল (মাসিক) চক্রে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে রক্তপাত হয় তখন তাকে অ্যাবনরমাল ইউটেরাইন ব্লিডিং (Abnormal Uterine Bleeding) বলে। তা সে নির্দিষ্ট দিনগুলোতে স্বাভাবিকের থেকে পরিমাণে বেশিও হতে পারে আবার সময়কালও দীর্ঘ হতে পারে। যদি পরিমাণ এতটাই বেশি ও অপ্রত্যাশিত হয় যে স্বাভাবিক জীবন-যাপন অর্থাৎ স্কুল, অফিস সব ব্যাহত হয়, তখন বুঝতে হবে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে।
অ্যাবনরমাল ইউটেরাইন ব্লিডিং-এর যে ক’টা কারণ আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। বয়ঃসন্ধির সময় ও মেনোপজের প্রাক্কালে, ওভিউলেশেনের সময় হরমোনের প্রভাবেই ইউটেরাস বা জরায়ুর আস্তরণ বা এণ্ডোমেট্রিয়াম্ পুরু হয়ে যাবার ফলে অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত ব্লিডিং অথবা দুটি মেনস্ট্রুয়াল চক্রের মধ্যে স্পটিং এইসব হয়ে থাকে। এছাড়াও, জন্মনিরোধক পিল্ ও অন্যান্য ওষুধের প্রয়োগ, দ্রুত ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস, মানসিক ও শারীরিক স্ট্রেস্, ইন্ট্রা-ইউটেরাইন ডিভাইস (IUD) -র ব্যবহার, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এই সবের জন্যও হরমোনের ভারসাম্যের তারতম্য ঘটে।
ইউটেরাসের গঠনগত সমস্যাও অ্যাবনরমাল ইউটেরাইন ব্লিডিং-এর জন্য দায়ী। অনেক সময় ইউটেরাস বা জরায়ুর দেওয়ালে নন্-ক্যান্সারাস্ টিউমার বা ফাইব্রয়েড, অ্যাডেনোমায়োসিস্, পলিপ্, এণ্ডোমেট্রিয়োসিস্ এই সব কারণেও জরায়ুর অস্বাভাবিক রক্তপাত হয়ে থাকে।
তাছাড়া, রক্ত তঞ্চনের সমস্যা, রক্ত তরলীকরণের ওষুধের প্রভাব, সার্ভিক্স, এণ্ডোমেট্রিয়াম্, ইউটেরাসের ক্যান্সার, কিডনি, লিভার, থাইরয়েড বা পলিপ্, গ্ল্যাণ্ডের অসুস্থতা, সার্ভিক্স ও এণ্ডোমেট্রিয়ামে কোনো সংক্রমণ, যৌনব্যাধি এসবের জন্যও অ্যাবনরমাল ইউটেরাইন ব্লিডিং হতে পারে।
পর পর কয়েকটা মেনস্ট্রুয়াল (মাসিক) চক্রের উপসর্গগুলো ঠিক মতো লক্ষ্য করলে ও চিকিৎসককে এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানালে তিনি শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে গর্ভাবস্থার পরীক্ষা, রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, আলট্রাসাউন্ড, হিস্টেরোস্কোপি, বায়োপসি, ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং এই সব পরীক্ষার মাধ্যমে রোগের সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারেন।
যদি অ্যাবনরমাল্ ইউটেরাইন্ ব্লিডিং হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়, তাহলে তা প্রতিহত করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই হরমোনের অসামঞ্জস্য যদি অতিরিক্ত ওজনের জন্য ঘটে, তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তার প্রতিরোধ করা যায়। আমাদের শরীরের ওজন, হরমোনের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। কাজেই, সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করে অ্যাবনরমাল ইউটেরাইন ব্লিডিং-কে আটকানো যায়।
কি কারণে অস্বাভাবিক জরায়ুর রক্তপাত বা অ্যাবনরমাল ইউটেরাইন ব্লিডিং হচ্ছে তার ওপর এই রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে। যদি উপসর্গগুলো ক্রনিক অসুখ বা রক্তের অসুস্থতার ইঙ্গিত করে তাহলে চিকিৎসায় উপকার পাওয়া যায়। কেউ গর্ভধারণ করতে চাইলে তার চিকিৎসা ও মেনোপজের দোরগোড়ায় উপস্থিত রোগীর চিকিৎসা অবশ্যই আলাদা হবে। প্রাথমিকভাবে, ওষুধের মাধ্যমেই চিকিৎসা শুরু হয়। গর্ভনিরোধক বড়ির দ্বারা শরীরে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষার দ্বারা মেনস্ট্রুয়াল চক্রটি স্বাভাবিক রাখা হয়।রক্ত তরলীকরণের ওষুধ, হরমোনের নিঃসরণ কমানোর ওষুধ, রক্ত তঞ্চনের ওষুধ, প্রোজৈস্টেরণ জাতীয় হরমোনের প্রয়োগ করে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। কখনো কখনো প্রয়োজন অনুসারে সার্জারির মাধ্যমেও এই রোগের নিরাময় করে থাকেন একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment