সোরিয়াসিস হল এক রকম জটিল অটোইমিউন ডিসঅর্ডার এবং সোরিয়াসিসের চিকিৎসাও বেশ জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদি হয়। এই রোগে ত্বকের কোষ খুবই দ্রুত সৃষ্টি হতে থাকে, একটা কোষের আয়ু শেষ হওয়ার পূর্বেই নতুন কোষ সৃষ্টি হওয়ায় আক্রান্ত স্থানটিতে মাছের আঁশের মতন স্তর সৃষ্টি হয় । নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোনো বয়সীরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে ত্রিশোর্ধ্বরা বেশি আক্রান্ত হন। দেখা গেছে পৃথিবীর ১ থেকে ২ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত।
একদমই নয়। সোরিয়াসিস কোনোভাবেই সংক্রামক রোগ নয়। এটি কোনও ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়ার কারণে হয় না। কাজেই এটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় না।
প্রত্যেক রুগীর একই লক্ষণ দেখা দেবে তা নয়। সোরিয়াসিসের উপসর্গ বা লক্ষণগুলির ধরণ ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীর কনুই, হাঁটু, মাথার তালু, হাত ও পায়ের নখ আবার কখনও কখনও সারা দেহের ত্বকের ওপর লাল চাকা চাকা হয়ে যায়। এই লাল চাকাগুলিতে মাছের আঁশের মতন আস্তরণের সৃষ্টি করে ও ভীষণ চুলকানি হয়। হাতের নখে হলে নখ মোটা ও রঙ নষ্ট হয়ে যায়। কখনও কখনও চামড়া থেকে নখ আলগা হয়ে বেরিয়ে আসে। কোন কোন সময় আক্রান্ত জায়গা গুলি অতিরিক্ত শুকিয়ে ফাটল ধরার কারণে বা চুলকানির জন্য ত্বক থেকে রক্তপাত হতে থাকে।
আক্রান্ত অংশ গুলি ফুলে ফুলে যায়।
নখের জয়েন্ট গুলি ফুলে ফুলে যায় ও যন্ত্রণা হয়। গাঁট ফুলে গিয়ে বিকৃত আকার ধারণ করে। এই রকমের উপসর্গ সোরিয়াটিক আর্থারাইটিসের লক্ষণ।
সোরিয়াসিসের এই সমস্যাগুলি সবসময় একই থাকে তা নয়, বেশ কিছুদিন অন্তর বাড়ে অথবা কমে।
সোরিয়াসিসের কারণ এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে বহু বিজ্ঞানীদের বহুদিনের সাধনা ও গবেষণার ফল হিসাবে প্রধান দুটি ফ্যাক্টর বা কারণ পাওয়া গিয়েছে।
১। ইমিউন সিস্টেম
সোরিয়াসিস হওয়ার প্রধান একটি কারণ হলো মানবদেহের অতিসক্রিয় ইমিউনিটি। অর্থাৎ আমাদের শরীরের যে রোগ প্রতিরোধক তন্ত্রটি রয়েছে তার অতি সক্রিয়তার কারণে সেটি আমাদের ত্বকের কোষগুলির উপর অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে এবং এই রোগের সৃষ্টি করে। তাই এটিকে অটোইমিউন ডিসঅর্ডারও বলা হয়।
২। জিনগত সমস্যা
আর একটি মুল কারণ হল জিনগত বা বংশগত সমস্যা। কিছু ব্যাক্তি তাদের জিনেই সোরিয়াসিসের কারণগুলি বহন করে। কারও পরিবারে যদি এই সমস্যা থেকে থাকে, তার সোরিয়াসিসের সম্ভাবনা অনেকটাই বেশী। ন্যাশানাল সোরিয়াটিক ফাউনডেশানের (NPF) মতে, মোট সোরিয়াটিক রোগীর ২ থেকে ৩ শতাংশ জিনগত ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে যেমন –
চিকিৎসকরা চোখে দেখেই সোরিয়াসিস চিহ্নিত করতে পারেন তবে সোরিয়াসিসের প্রকৃতি ও তার সঙ্গে আরও কোনও রকম জটিলতা আছে কি না জানতে স্কিন বায়োপসি করা হয়।
প্রথমেই বলে রাখই, এই রোগের উপসর্গ দেখা মাত্রই একজন ত্বক-বিশেষজ্ঞ বা ডারমাটোলজিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। ফেলে রাখা উচিত নয় কোনভাবেই। এ রোগ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ।
১। এই রোগের চিকিৎসায় কিছু ভিটামিন ও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ও তার সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার লোশন এর ব্যাবহার করা হয়।
২। একধরনের UV Ray (Ultraviolet Ray) প্রয়োগ করেও এর চিকিৎসা করা হয়, একে ফোটোথেরাপি বলা হয়।
যেহেতু একটা ক্রনিক প্রবলেম তাই ধৈর্য ধরতে হবে। সমস্যাটি বুঝতে, আপনার ত্বকের ধরন বুঝতে, এবং আপানরা দ্বারা গৃহীত ওষুধের আপনার শরীরে কিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করছে সেটি অনুধাবন করতেও একজন চিকিৎসকের বেশকিছু সময় লাগে । অতএব ধৈর্য হারালে চলবে না।
এর থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল কারণ গুলিকে রোধ করা। সোরিয়াসিস থেকে দূরে থাকতে যে যে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে –
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment