এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কি? এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

Published by

এন্টিবায়োটিক শব্দটির সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশী পরিচিত কিন্তু এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কি সেটা অনেকেই জানেন না । আমাদের মধ্যে অনেক কম সংখ্যক লোক আছি যারা জীবনে কখনও এন্টিবায়োটিক খাই নি । একটু জর,  সর্দি ,কাশী যাই হোক না কেন ডাক্তারের কোনও পরামর্শ ছাড়াই পাশের ঔষধের দোকান লাগামহীন এন্টিবায়োটিক নিচ্ছি  এবং নিজের অজান্তেই নিজেকে এক পা দু পা করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি । এন্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত অযৌক্তিক ব্যবহারের ফলে  আমাদের দেহ এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী (এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ) হয়ে যাচ্ছে  যা যথেষ্ট প্রানঘাতী ।   বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী  আগামী দিনগুলিতে  ক্যান্সার এবং এইডসের মতো মারাত্মক ব্যাধি থেকেও এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স জনিত কারনে  মানুষের মৃত্যু বেশী হবে ।

এন্টিবায়োটিক কি ?

 এন্টিবায়োটিক একটি ওষুধ যা শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়াল  সংক্রমণ এর প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়  । এন্টিবায়োটিক  হয়  আমাদের দেহে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে নয় তাদের বংশবিস্তার কে প্রতিহত করার মাধ্যমে  আমাদের সুস্থ করে তোলে । এটি  ফ্লু, ,সর্দি ,কাশি, ঠান্ডার মতো ভাইরাল সংক্রমণের ক্ষেত্রে কোনও কাজে আসে না  বরং শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়া গুলোর মৃত্যু ঘটিয়ে   আমাদেরকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দেয় । তাই একজন ডাক্তারের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী  এন্টিবায়োটিক নেওয়ার কথা বলা হয় ।

 এন্টিবায়োটিক নেওয়ার পরেই কিছু সময়ের মধ্যে এর কাজ শুরু হয় । সাধারনত বেশীর ভাগ সময়  ৭  থেকে ১৪ দিনের জন্য  এন্টিবায়োটিক নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় তবে কখনো কখনো আরও কম দিনেও ভালো কাজ করে । এক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নির্দিষ্ট  এন্টিবায়োটিক এবং ডোজ এর বিষয়ে বুঝিয়ে দেবেন  ।

এন্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সাধারণত নিম্নলিখিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে

  • বমি বমি ভাব ।
  • ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে ।
  • পেটের সমস্যা দেখা দিতে পার ।
  • কিডনিতে পাথর হবার সম্ভাবনা বাড়ে ।
  • কিছু লোকের এন্টিবায়োটিক (যেমন পেনিসিলিন) অ্যালার্জি হতে পারে ।
  • ডায়ারিয়া এবং পেটে ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে ।
  • অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক নেওয়ার ফলে শরীর  এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হতে পারে ।

এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কি?

এন্টিবায়োটিকের কারনে অকারনে অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য  ধীরে ধীরে  একটা সময় পর এগুলি  ব্যাক্টেরিয়ার উপর আর প্রভাব ফেলতে পারেনা অর্থাৎ শরীরে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে ওঠে যা  বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলছে এবং এটি সাধারণ সংক্রামক রোগ গুলির ( যেমন নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা,খাদ্যজনিত রোগ, রক্তের বিষক্রিয়া এবং  গনোরিয়া ) চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ।

আজ পর্যন্ত বিজ্ঞান যা কিছু দিয়েছে তাঁর প্রত্যেকেরই ভাল মন্দ দিক রয়েছে তেমনি এন্টিবায়োটিকের ওষুধ গুলিরও ভালো মন্দ দিক রয়েছে , এটা নির্ভর করছে আপনার সচেতনতার উপর, আপনার সামাজিক ও পারিবারিক দায়বধ্যতার উপর । তাই জীবনের যে কোন সময়  অসুস্থ হলে নিজে নিজে ডাক্তারি না করে একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে যান ,যাতে আপনার জীবন এবং অর্থ দুটোই সুরক্ষিত থাকে ।

Amarendra Haldar

I belong from Tripura , As a Diet Students always interested in helping people about physical and mental well-being . I am very happy to join as a Health Blogger in Healthinside And hope i Will contribute something good for our readers.

Leave a Comment
Share
Published by

Recent Posts

ব্রঙ্কাইটিস: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…

4 months ago

ডায়াবেটিস রোগীকে কখন দিতে হয় ইনসুলিন?

ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…

4 months ago

ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায়

সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…

4 months ago

কুকুরে কামড়ালে করণীয় কি

পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…

4 months ago

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কী করণীয়

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…

4 months ago

ব্রেন স্ট্রোক: এই লক্ষণগুলি থাকলে সতর্ক থাকুন

ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…

4 months ago