ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় শুরু হল ফাস্ট ফরোয়ার্ড

Published by

ব্রেস্ট ক্যান্সার, মহিলাদের মধ্যে হওয়া সবথেকে কঠিন মারণ রোগের মধ্যে একটি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতবর্ষে প্রতি আট জন নারীর মধ্যে একজনের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একটু সতর্ক না হলেই এটি সময়ে অসময়ে চোরা বালির মতই বিপদের একেবারে দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে পারে। তবে চিকিৎসার অগ্রগতি ও মানুষের সচেতনতায় ক্যান্সার আজ অনেকাংশেই পরাজিত। কিন্তু যেটি সমস্যার সেটি হল এই চিকিৎসার খরচ এবং সময়। দীর্ঘ সময় ধরে চলা চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক সময়ই রোগী এবং রোগীর পরিজনদের মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। তাহলে এই সমস্যার সমাধান কি?

ডাঃ সায়ন পাল ও ডাঃ শুভাদিপ চক্রবর্তী

 ক্যান্সার সার্জেন ডাঃ শুভদীপ চক্রবর্তী এবং  ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ সায়ন পাল এর কথায় – ব্রেস্ট ক্যান্সার একটি নিরাময়যোগ্য ক্যান্সার। কিন্তু ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রক্রিয়া দীর্ঘ। সময় লাগে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় মাস। অল্প কিছু ক্ষেত্র ছাড়া প্রায় সবারই অপারেশন, রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির প্রয়োজন হয়। এতদিন রেডিয়েশন দেওয়া হত তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহে, কিন্তু গত বছর ইংল্যান্ড  থেকে ফাস্ট ফরোয়ার্ড ট্রায়াল প্রকাশিত হয় ল্যানসেট জার্নালে। এতে মাত্র পাঁচ দিনে রেডিয়েশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একই ফলাফল (নিরাময় এবং সাইড এফেক্ট তিন সপ্তাহের সাথে তুলনা করে) পাওয়া গেছে। এর ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সারে অস্ত্রোপচারের পরবর্তী রেডিয়েশনের কোর্স এক সপ্তাহেই শেষ হবে।

করোনা আবহে গতবছর এই ট্রায়াল প্রকাশিত হওয়ার পর মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে এর প্রয়োগ শুরু হয়। অ্যাপোলো হাসপাতালের ক্যান্সার চিকিৎসক ডাঃ সায়ন পাল জানালেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর সময় তিনি কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে এ এই প্রোটোকল শুরু করেন এবং খুবই আশাপ্রদ ফল লাভ করেছেন। এতে রোগী ও তার সহযোগীর যাতায়াত, থাকা খাওয়ার খরচ অনেকাংশেই কমে যায়। কাজের দিনও কম নষ্ট হবে। রেডিয়েশনের সুবিধা যেহেতু কেবল শুধু বড় শহরগুলোয় আছে, সেইহেতু এই পদ্ধতিতে সেইসব রোগীরা উপকৃত হবেন, যাঁরা রেডিয়েশনের জন্য বাড়ি ছেড়ে দূর শহরে থাকতে বাধ্য হন। বিদেশ থেকে আগত রোগীরাও এর ফলে অনেক উপকৃত হবেন। সর্বোপরি করোনা আবহে হাসপাতালে মাত্র পাঁচদিন এসেই রোগী তাঁর রেডিয়েশন চিকিৎসা সম্পূর্ণ করতে পারবেন। অতিমারীর আবহে এই এক সপ্তাহের চিকিৎসা এক আশীর্বাদ স্বরূপ এবং এর ফলে রোগী অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানসিক ভাবেও যথেষ্ট উপকৃত হবেন।

Anshula Banerjee

Hello, I am Anshula Banerjee, completed my post-graduation degree in English, along with Bachelor of Education. I live at Nadia. I am a voracious reader in various fields of knowledge that may help the readers to satisfy their urge specially in the area of health and wellness.

Leave a Comment
Share
Published by

Recent Posts

ব্রঙ্কাইটিস: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…

4 months ago

ডায়াবেটিস রোগীকে কখন দিতে হয় ইনসুলিন?

ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…

4 months ago

ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায়

সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…

4 months ago

কুকুরে কামড়ালে করণীয় কি

পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…

4 months ago

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কী করণীয়

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…

4 months ago

ব্রেন স্ট্রোক: এই লক্ষণগুলি থাকলে সতর্ক থাকুন

ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…

4 months ago