দ্বিধাহীন ভাবেই একটি ছেলে বা মেয়ের বেড়ে ওঠার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো বয়ঃসন্ধিকাল৷ আগল ভাঙার এই বয়সে তারা শৈশব থেকে কৈশোরে পদার্পণ করে। যৌন হরমোনের ক্ষরণে শরীর ও মনে আসে একটি বিরাট পরিবর্তন। এমন এক বয়স, যখন ভাবনা আসে, ‘কেউই আমাকে বোঝে না’। অন্যের মনোযোগ পাওয়ার বাসনা , বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কামনা জন্মায় এই বয়ঃসন্ধির সময়। আবার এই বয়সেই থাকে ভুল পথে যাওয়ার আশঙ্কাও, আচমকা মতিভ্রম টেনে নিয়ে যায় বিপদের মুখে। বাবা-মা, অভিভাবকদের কাছেও তাই এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাঁদের দায়িত্ব থাকে সন্তানের বয়ঃসন্ধিতে সত্যিকারের পাশে থাকার।
সন্তানকে তাদের মতো করে বোঝার চেষ্টা করা, পাশে থাকার এবং সর্বোপরি বন্ধুর মতো মিশে তাঁদের সমস্যা সমাধান করার দায়িত্ব বর্তায় আসলে বাবা-মায়ের উপরেই। আসলে সবার জীবনেই বয়ঃসন্ধি নামক এই ক্রান্তিকালকে অতিক্রম করতে প্রয়োজন হয় বন্ধুর। আর এই জায়গাটা পূরণ করতে হবে বাবা-মাকেই। নির্ভরযোগ্য এবং ভরসাযোগ্য বন্ধু তারা কিভাবে হয়ে উঠবেন সন্তানের, সে সিদ্ধান্ত কিন্তু তাদেরই নিতে হবে৷
বয়ঃসন্ধি বা Puberty একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে একটি শিশুর শরীর ধীরে ধীরে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে রূপান্তরিত হয় এবং প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে৷ মস্তিষ্ক থেকে গোনাডে হরমোন সংকেত যাবার মাধ্যমে এর সূচনা ঘটে। দেশ, সংস্কৃতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনের ওপর নির্ভর করে বয়ঃসন্ধির সময়কাল। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র মতে, ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলে বা মেয়েকে কিশোর বা কিশোরী বলে অভিহিত করা হয়। এর যে কোনও সময় শুরু হতে পারে বয়ঃসন্ধি প্রক্রিয়া। এই বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক পরিবর্তন তো আসেই সঙ্গে বিরাট পরিবর্তন আসে মানব শরীরেরও । চিকিৎসকদের মতে, মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল, ছেলেদের চাইতে কিছুটা আগেই শুরু হয়। মূলত ৯ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে যে কোনও সময় তা হতে পারে। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল আসে গড়ে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যে। বয়ঃসন্ধি দেখা দেওয়ার চার বছরের মধ্যেই মেয়েরা তাদের উচ্চতা এবং প্রজনন ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে লাভ করে, অন্যদিকে ছেলেদের ক্ষেত্রে এই পরিপূর্ণতা আসলে সময় লাগে ছ’বছর অব্ধি। বয়ঃসন্ধির সূচনা হয় GnRH এর উচ্চ স্পন্দনের মাধ্যমে, যা যৌন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়।
ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা আগে বয়ঃসন্ধিতে পা দেয়। মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন গুলি যেমন দেহে নারী-সুলভ বৈশিষ্ট ফুটে ওঠা, হাত, পা, নিতম্ব ইত্যাদিতে মেদ জমা হওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। স্তন উন্নত হয়ে ওঠে, মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়, কণ্ঠস্বরও পরিণত হয়ে সরু হয়ে ওঠে। ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়৷
অন্যদিকে ছেলেদের ক্ষেত্রে যে শারীরিক পরিবর্তন হয় সেখানে তাদের কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে ওঠে। গোঁফের রেখা স্পষ্ট হয়। শরীরে লোম দেখা যায়। দেহের মধ্যে বীর্য বা শক্তি সৃষ্টি হয় এবং একটি বড় রকম মানসিক পরিবর্তন ঘটে।
শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের কারণে এই সময়ে ছেলেমেয়েরা প্রায়ই নিয়ে ফেলে ঝুঁকিপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ৷ তাই বন্ধু হয়ে পাশে থেকে হাতটা শক্ত করে ধরে থাকুন আপনার সন্তানের৷
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক পরিবর্তন স্বাভাবিক, এই সময় ছেলে-মেয়েরা এমন কিছু আচরণ করে যা অস্বাভাবিক হলেও ওদের বয়সে স্বাভাবিক তাই বন্ধুত্ব স্থাপন করুন, বন্ধু হয়ে উঠুন সন্তানের। মনে রাখবেন একমাত্র আপনিই সন্তানের ব্যক্তিত্বের ভিত্তি সুদৃঢ় করে তাকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ উপহার দিতে পারেন।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment