ভিটামিন K কখন গ্রহণ করা উচিৎ তা নির্ধারণ করা দরকার। সন্তান প্রসবের পরে ভাবনা চিন্তা করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আপনার শিশুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি ১০০ জন শিশুর জন্মের সময় ভিটামিন K ইনজেকশন না দেওয়ার ফলে দুজন শিশুর ভিটামিন K-এর অভাবজনিত রক্তপাত হতে পারে (VKDB নামে পরিচিত), এবং VKDB আক্রান্ত পাঁচ শিশুর মধ্যে একজন মারা যেতে পারে। অনেক সময় নাক থেকে রক্ত পরতে থাকে ।
অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট ভিটামিন K রক্ত জমাট বাঁধতে এবং গুরুতর রক্তপাত বন্ধ করার জন্য অপরিহার্য। চিকিৎসকরা জানান যে একজন সুস্থ নবজাতকের পাকস্থলী প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো পর্যাপ্ত ভিটামিন K তৈরী করতে পারে না। প্রাপ্তবয়স্করা যেমন স্বাস্থ্যকর খাবার অর্থাৎ সবুজ শাক সবজির মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় ভিটামিন K পেতে পারে, কিন্তু নবজাতকদের জন্মের সময় তাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন K না থাকায় শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে, জন্মের পরপরই তাদের ভিটামিন K-এর প্রয়োজন।
ভিটামিন K নবজাতকদের মধ্যে বৃদ্ধি পেতে সময় নেয়, যার জন্য তাদের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই এর মাত্রা কম থাকে। চিকিৎসকরা জানান যে, নবজাতকরা তাদের জন্মদানকারী মায়ের শরীরের ভিটামিন K এর মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে না, কারণ এটি প্লাসেন্টা বা মায়ের দুধের মাধ্যমে ভালভাতে স্থানান্তরিত হয় না ৷ যখন শিশুরা ভিটামিন কে-এর কম মাত্রা অনুভব করে,তখন তারা ভিটামিন K-এর অভাবজনিত রক্তপাত বা VKDB নামক একটি কঠিন রোগের সম্মুখীন হতে পারে। বলা বাহুল্য, আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স (AAP) ১৯৬১ সাল থেকে শিশুদের ভিটামিন K গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞরা জানান যে নবজাতকদের শরীরে ভিটামিন K-এর পরিমাণ কম থাকায় ইনট্রামাসকুলার (আইএম) ভিটামিন K-এর শট তাদের সাধারণত জন্মের পরপরই দেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে নবজাতকদের জন্য ভিটামিন K ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় তা খুবই নিরাপদ। ১৯৯০ সালে, একটি ছোট গবেষণায় ভিটামিন K শট এবং লিউকেমিয়ার মধ্যে একটি সম্ভাব্য সংযোগের কথা জানানো হয়েছিল। তবে নিশ্চিন্ত থাকুন কারণ এই গবেষণাটির থেকে প্রাপ্ত তথ্যকে বেশ কয়েকবার বাতিল করা হয়েছে। এরপরেই বহু চিকিৎসক জোর দিয়ে বলেন যে ভিটামিন K ইনজেকশন এবং লিউকেমিয়ার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।
আজকাল অনেক বাবা-মা তাদের শিশুকে দেওয়া যে কোনো ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য পরিণতিগুলি সম্পূর্ণরূপে বোঝার চেষ্টা করেন, তাই শট নিয়ে কিছুটা দ্বিধা থাকতেই পারে। চিকিৎসকরা জানান যে, VKDB শিশুর মধ্যে যে কোনো সময় ঘটতে পারে এবং এর নিরাময় অসম্ভব। এমনকী এটি স্থায়ীভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে এবং এর দ্বারা শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। শিশু বিশেষজ্ঞরা বলেন, অভিভাবকদের মধ্যে যাঁরা ভিটামিন K ইনজেকশন না নেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁদের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করা উচিৎ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আপনার নির্ধারিত তারিখটি কাছে আসার সাথে সাথে, ভিটামিন K শটটি আপনার ছোট্টটির জন্য সঠিক কিনা তা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার শিশুর যতটা সম্ভব সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য আপনার যে কোনো প্রশ্ন থাকলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করতে কখনই দ্বিধা করবেন না।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment