গর্ভধারণ বা শিশুর পৃথিবীতে আসার যে মুহূর্ত পরিবারের সদস্যদের জন্য খুব আনন্দের। তাই অনেকেরই মনে একটি প্রশ্ন জাগে, গর্ভাবস্থায় কি সহবাস করা যায়? অধিকাংশ মানুষই এই বিষয়ে অনেক কিছু ভেবে বসেন আবার এই বিষয়টি নিয়ে সমাজে অনেক ভুল ধারণাও প্রচলিত রয়েছে। অনেক লোক লজ্জার ভয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারে না কিন্তু নিজের মনের ভেতরে একটি ভুল ধারণা করে বসেন । একটি সুস্থ স্বাভাবিক স্বামী স্ত্রী মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক বা চলতি কথায় সহবাস শুধু তাদের ভালোবাসাকে গভীর করে না, মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে স্বাস্থ্যকেও ভালো করে তোলে । আর যখন তারা হবু বাবা-মা হতে চলে তখন তাদের মাথায় অনেক রকম প্রশ্ন সব সময় চাড়া দিয়ে ওঠে যে গর্ভাবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ হবে কিনা এবং এটি কোনও ভাবে গর্ভে থাকা সন্তানের উপরও কোন প্রভাব ফেলতে পারে কিনা । এত আনন্দের মধ্যেও কোথাও যেন আবার তারা তাদের মধ্যে হয়ে থাকা হরমোনের পরিবর্তনগুলি, অবসন্ন বা ক্লান্তিবোধ এবং তাদের মধ্যে দেখা দেওয়া পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে আরও বেশি নিজেদেরকে সচেতন করে থাকেন যা তাদের যৌন মিলনের ইচ্ছা গুলোর উপর একটা বাজে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় যৌনসহবাস করার সব চেয়ে ভালো সময় কোনটি, এর উপকারিতা ,কখন এটি এড়িয়ে চলা দরকার ,এর সুরক্ষিত অবস্থানগুলি কি কি এই সমস্ত আরও কিছু প্রশ্ন নিয়েই চলুন আলোচনা করা যাক ।
গর্ভাবস্থার সময় আপনার শরীর যদি একটি সুস্থ, স্বাস্থ্যকর এবং স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে সেক্ষেত্রে সন্তান জন্ম হওয়ার বা গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস আগে পর্যন্ত সহবাস করা যেতেই পারে । গর্ভাবস্থায় একজন মহিলা যতদিন স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারে ততদিন সহবাসে কোন সমস্যা হয় না। অর্থাৎ প্রসব যন্ত্রনা শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত সহবাস নিরাপদ বলেই মানা হয়। কিন্তু এই সময়েও কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। গর্ভাবস্থায় সহবাসের সময় স্বাভাবিক মিলন বাচ্চার খুব একটা ক্ষতি করেনা। গর্ভাবস্থায় একজন মহিলাকে নানা রকম মানসিক ও শারীরিক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই সময় তার সঙ্গীর সাথে নিবিড় সময় কাটাতে ইচ্ছে করতেই পারে। তবে,আপনার ডাক্তার বাবু যদি বলে থাকেন যে আপনার গর্ভাবস্থা সময়কালে আপনার শরীরে কোন ঝুঁকি রয়েছে অথবা তিনি যদি কিছু পরিস্থিতির কারণে গর্ভাবস্থাকালে আপনাকে সহবাস করতে বারণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তবে সেক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারের উপদেশ মেনে চলাই ভালো ।
না, সহবাসের ফলে বাচ্চার কোনও রকম ক্ষতি হয় না।কারণ শিশু জড়ায়ুর শক্ত পেশি দ্বারা তলপেটে সুরক্ষিত থাকে। জড়ায়ু মুখকে ঢেকে রাখে ঘন মিউকাস প্লাগ যা বাচ্চাকে ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই, জল ভাঙা বা জল বেরিয়ে আসার আগে পর্যন্ত যৌনমিলন সম্পূর্ণ নিরাপদ। অনেকেই মনে করেন যে, গর্ভাবস্থার প্রথম তিনমাস গর্ভপাতের আশঙ্কা এবং শেষ দিকে সময়ের আগেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। সবার শরীরের ধরন আলাদা হয়। এক্ষেত্রে, একমাত্র ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে রাখা ভালো। শিশু ও হবু মায়ের শরীর বুঝে ডাক্তার যদি অনুমতি দেন তাহলে কোনও ভয় নেই। যৌন মিলনের পরে, মা অনেকসময় পেটের ভিতর বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করতে পারেন। এতে ভয় পাওয়ার কোনও কারন নেই। বাচ্চার কোনও ক্ষতিও হয়না। সহবাসের পরে মায়ের হার্ট-বিট বেড়ে যায় বলেই বাচ্চা তার ফলে একটু নড়াচড়া শুরু করে। তবে কোন রকম বেঠিক মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নেওয়া ভালো ।
পরিসংখ্যানগতভাবে, গর্ভধারণের প্রথম ১৩ সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ গর্ভপাত ঘটে যায়। যদি কোন গর্ভবতী মহিলা এই সময়ের মধ্যে তার স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্ক করার কথা ভাবেন, তবে তিনি সন্দেহ করতে পারেন যে এর ফলে গর্ভপাত হতে পারে। তবে এটি সব সময় ঠিক নয়। যৌন মিলনের পরে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। শরীরে কোন অস্বাভাবিকতার কারণেই সাধারণত গর্ভপাত ঘটে। যদি আপনার গর্ভাবস্থা সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে তবে আপনার গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস যৌন সঙ্গম করা যেতেই পারে। ডাক্তারবাবুরা গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস বা প্রসব যন্ত্রণা ওঠার আগে পর্যন্ত গোটা সময়কাল টাকে সহবাসের জন্য নিরাপদ বলে মনে করে থাকেন । তবে নিরাপদ এবং আরামদায়ক অবস্থায় করা উচিত। আপনি যখন আপনার সঙ্গীর সাথে সহবাস করেন, তখন আপনার জরায়ুতে থাকা অ্যামনিয়োটিক নামক তরল শিশুকে রক্ষা করবে। সঙ্গীর সাথে যৌন মেলামেশা করা আপনার শিশুর কোন ক্ষতি করবে না। তবে কোন জটিলতা থাকলে সেই দিকে নজর রাখা উচিত।
গর্ভবস্থার সময় অথবা শিশু পেটে থাকাকালীন স্বামী স্ত্রী এর মধ্যে সহবাস করা সম্পূর্ণ নিরাপদ। তবে ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে গর্ভাবস্থায় সহবাস করাই ভালো । সঙ্গীর যদি কোনও রকম যৌন রোগ আগে হয়ে থাকে, তা হলে সেক্ষেত্রে এই সময়টা সহবাস করা উচিত না। নিজের শারীরিক ক্ষমতা এবং মানসিক চাহিদা বুঝে কাজ করাই ভালো । আবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে সহবাস করাও উচিত না।
সহবাসের সময় কোনও অবস্থাতেই যেন যোনিতে এয়ার ব্লো না করা হয়। এর ফলে ভিতরে বাতাসের বুদবুদ তৈরি হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। এই ঘটনা মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই প্রাণঘাতী হতে পারে।সহবাসের পরে সবসময় গোপনাঙ্গ খুব ভালো করে পরিষ্কার করুন। তা না হলে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্খা থাকতে পারে। সহবাসে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। সহবাসের পরে যদি যোনি থেকে কোনও তরল বেরিয়ে আসে বা রক্তপাত হয়, ডাক্তারকে একবার দেখিয়ে নিতে ভুলবেন না।
সবার শরীর সমান না হওয়ার কারণে ডাক্তারের অনুমতি নিয়েই গর্ভাবস্থায় সহবাস করা শিশু এবং হবু মা দুজনের জন্যই ভালো।
গর্ভাবস্থায় সহবাস করার আদেও কি কিছু উপকারিতা আছে এটা অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে ।গর্ভাবস্থায় সহবাস করার ফলেএকজন হবু মায়ের মন খুশি থাকে এবং তাঁকে আরও তরতাজা করে তোলে তার সঙ্গীর সাথে কাটানো নিবিড় সময়টা । তার ফলে হবু মায়ের কিছুটা হলেও ক্যালোরি কমে এবং রক্তচাপ কম রাখতে সাহায্য করে ।
সহবাসের ফলে একজন গর্ভবতী মা যে যৌন উত্তেজনা অনুভব করে তার প্রভাবে যে একধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, তার জন্য হবু মা তার শরীরের ব্যথা যন্ত্রণাকে অতটা টের পায় না। ফলে, তার মনটাও ভালো থাকে। এর ফলে গর্ভবতী মায়ের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়ে ওঠে।
গর্ভাবস্থা জটিলতা থাকলে তো ডাক্তারই সহবাসের অনুমতি দেবেন না। এছাড়াও, কিছু কিছু পরিস্থিতিতে গর্ভাবস্থায় সহবাস এড়িয়ে যাওয়াই উচিত। যেমন;
এইসমস্ত দিকে একটু খেয়াল রাখলে কোন গর্ভাবস্থায় সহবাস করা কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যৌনতা একটি স্বাস্থ্যকর শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, এবং গর্ভাবস্থায় সহবাস করা আপনাকে চাপ–মুক্ত এবং সুখী রাখতে পারে। যৌন মিলনের ফলে কোনভাবেই গর্ভপাত ঘটবে না, যদি না আপনার শরীরের ভেতরে চিকিৎসাগত কোন সমস্যা থাকে। আপনার যদি সন্দেহ থাকে তবে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ নিয়ে সেই মতো এগিয়ে যান।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment