আপনি কি আপনার পরিবারে নতুন অতিথি কে স্বাগতম জানাতে প্রস্তুত? এর উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তাহলে এখন আপনার শুধুই ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করা কাজ। যদিও “মা” হতে পারার এই প্রক্রিয়ায় প্রকৃতি মায়ের পরিকল্পনার এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, তবুও আপনার কিছু করার বা না করার আছে যার মাধ্যমে আপনার গর্ভধারণ দ্রুত হতে পারে।
কনসিভ করার সিদ্ধান্ত নিলে একবার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। তাঁর সাথে প্রিন্যাটাল ভিটামিন (সুস্থ গর্ভাবস্থার জন্য মহিলাদের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলস), যা ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, সে ব্যাপারে কথা বলুন। ভ্রূণের জন্মগত ত্রুটি, যেমন স্পাইনা বিফিডা ইত্যাদি থেকে ভ্রূন কে রক্ষা করে। গর্ভাবস্থার একদম প্রথম দিকে ফলিক অ্যাসিডের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে, তাই এটা খেয়াল রাখতেই হবে যে, আপনি গর্ভধারণের আগে থেকেই যাতে পর্যাপ্ত ফলিক অ্যাসিড পান। এছাড়াও আপনার কোনো রকম শারীরিক সমস্যা থাকলে গর্ভধারণের আগে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
নিজের মাসিক চক্র সম্বন্ধে সঠিক ধারণা থাকলে আপনি জানতে পারবেন, যে ঠিক কোন সময় টা আপনি সবচেয়ে বেশি প্রজননক্ষম। ওভ্যুলেশনের সময়টা গর্ভধারণ করার সবথেকে উপযুক্ত সময়।
নিজের মাসিক চক্র সম্বন্ধে জানলে আপনি ওভ্যুলেশনের লক্ষনগুলোও সঠিকভাবে বুঝতে পারবেন। এইসময় সার্ভাইকাল মিউকাস পাতলা ও পিচ্ছিল হয় এবং এটাই গর্ভধারনের সবথেকে উপযুক্ত সময়।
ওভ্যুলেশন প্রেডিকশন কিটও আপনাকে আপনার ওভ্যুলেশন সম্বন্ধে সঠিক খবর দিতে পারে। যদি আপনি আপনার সঙ্গীর সাথে অনিয়মিত ভাবে শারীরিক সম্বন্ধে জড়িত থাকেন, তাহলে এই কিট আপনাকে জানিয়ে দেবে যে গর্ভধারনের জন্য কখন আপনাদের শারীরিক ভাবে মিলিত হওয়া প্রয়োজন।
এই কিট যেভাবে কাজ করে :
আপনার মেন্সট্রুয়াল পিরিয়ডের প্রথম দিনটিকে ১নম্বর দিন হিসাবে ধার্য্য করা হয়। নবম দিন থেকে টেস্ট করতে শুরু করুন এবং পজিটিভ রেজাল্ট না পাওয়া পর্যন্ত টেস্ট করতে থাকুন। আঠাশ দিনের সাইকেলে মহিলারা সাধারণত চৌদ্দতম দিনে ওভ্যুলেট করে থাকেন। তবে সবার ক্ষেত্রে এই হিসাব এক থাকে না।
যদি আপনি বার্থ কন্ট্রোল পিল ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনি গর্ভধারণ করতে চাইলে, বার্থ কন্ট্রোল পিল ব্যবহার বন্ধ করে আপনাকে কিছু দিন্ব্র জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আপনি পিল নেওয়া বন্ধ করার সাথে সাথেই গর্ভধারনের প্রচেষ্টা করতে পারেন। তবে মাথায় রাখতে হবে, আপনার মেন্সট্রুয়াল সাইকেল শুরু হওয়ার আগেই আপনি প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়তে পারেন, ফলে ওই ক্ষেত্রে ওভ্যুলেশন নির্ধারণ করা সম্ভব হয় না।
শারীরিক মিলনের সময় আপনার ও আপনার সঙ্গীর শারীরিক ভঙ্গিমা ও পজিশন এর ওপর আপনার গর্ভধারনের সম্ভাবনা বাড়ে বা কমে, এটি সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারনা। তবে ইন্টারকোর্সের সময় মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতের ভঙ্গিমায় থাকলে শুক্রাণুর পক্ষে আপনার সার্ভিক্সের অভ্যন্তরে পৌঁছানোয় অসুবিধা হয়ে থাকে।
বলা হয় যে, শারীরিক মিলনের পর ১০ থেকে ২৫ মিনিট বিছানায় শুয়ে থাকলে, শুক্রাণু সহজে সার্ভিক্সের ভেতরে প্রবেশ করে এবং কিছুক্ষন সেখানেই অবস্থান করে। মনে করা হয়, এর ফলে গর্ভধারণ সহজ হয়।
গর্ভধারনের জন্য ওভ্যুলেশনের সময় অতিরিক্ত বা দিনে একাধিকবার শারীরিক সঙ্গমের প্রয়োজন নেই। ওভ্যুলেশনের সময় প্রতি একদিন অন্তর আপনার গর্ভধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুক্রাণু আপনার শরীরে ৫ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে, তাই সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হল ওভ্যুলেশনের সময় হোক বা অন্য সময়, নিয়মিত সঙ্গম গর্ভধারনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।
এবার যদি শুক্রাণুর ব্যাপারে বলি, তাহলে খুব টাইট ফিটিং এবং সিন্থেটিক মেটেরিয়ালের কাপড় পরলে শুক্রাণুর পরিমান কমে যায়। একইভাবে হট টাব বা জাকুজি তে বেশিক্ষন সময় কাটালেও শুক্রাণুর পরিমান কমে যায়। শুক্রাণুর পরিমান ঠিক রাখতে গেলে সেলফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারও কমাতে হবে এবং সেলফোনকে শুক্রাশয়ের কাছাকাছি অর্থাৎ প্যান্টের পকেটে রাখা যাবে না। একটি সমীক্ষা অনুসারে যেসব পুরুষেরা সয়াবীন থেকে প্রস্তুত খাদ্য অতিরিক্ত পরিমানে খেয়ে থাকেন, তাদের শুক্রাণুর ঘনত্ব ও গুনগত মান কম থাকে।
একটি পরিবার শুরু করতে হবে, সন্তানের জন্ম দিতে হবে, এই ভেবে নিজের ওপর অতিরিক্ত মানসিক চাপ নিয়ে ফেলবেন না। মানসিক চাপ ওভ্যুলেশনের ওপর প্রভাব ফেলে। দেখা গেছে যে, আকুপাংচার মানসিক চাপ মুক্ত রাখতে এবং গর্ভধারণ করতে সাহায্য করে।
নিয়মিত এক্সারসাইজ একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, বিশেষ করে তা যদি আপনার শরীরের সঠিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি হার্ডকোর এক্সারসাইজার হয়ে থাকেন এবং তার পরেও আপনার পিরিয়ড ঠিক সময়ে হয়, তাহলে আপনার এক্সারসাইজ রুটিন ও পদ্ধতিতে কোনো সমস্যা নেই। খেয়াল রাখতে হবে মেন্সট্রুয়াল সাইকেলের একটা শর্টার সেকেন্ড হাফের ব্যাপারে। ওভ্যুলেশনের ১৪ দিন পরে পিরিয়ড হওয়া উচিত, কিন্তু অতিরিক্ত এক্সারসাইজ এই সময়সীমা টা কমিয়ে দেয়। এটাই প্রথম সংকেত যে, আপনাকে আপনার এক্সারসাইজ এর পরিমান কমাতে হবে। গর্ভধারনের সম্ভাবনা বাড়াতে এবং একইসাথে নিয়মিত এক্সারসাইজ এর মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখার সবচেয়ে উপযুক্ত উপায় হল মাঝারি পরিমানের এক্সারসাইজ করা, যেমন — আধঘন্টা করে সপ্তাহে পাঁচদিন হাঁটা অর্থাৎ একটা সপ্তাহে মোট আড়াই ঘন্টা হাঁটা।
নিজের গর্ভধারনের সম্ভাবনা বাড়াতে ধূমপান বন্ধ করুন। শরীরের ওপর ধূমপানের অন্য অনেক ক্ষতিকর প্রভাবের সাথে সাথে গর্ভধারণ ক্ষমতার ওপরও ধূমপানের অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব আছে। ধূমপান গর্ভধারণ ক্ষমতা কে কমিয়ে দেয়। ইস্ট্রোজেন লেভেল এবং ওভ্যুলেশনের ওপরও ধূমপান ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে।
উপরে বর্নিত বিষয়গুলো মাথায় রাখুন এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন। ৮৫% মহিলাই গগর্ভধারনের চেষ্টা শুরু করার এক বছরের ভেতর গর্ভধারনে সক্ষম হন।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment