শুচিবায়ু বা OCD একটি সাধারণ স্নায়ুবিক রোগ, যাকে ছুঁচিবাই ও বলা হয়। অশুচি হওয়ার ভয়ে বা শুচিতা রক্ষার জন্য বাড়াবাড়ি বা ছোঁয়াছুঁয়ি সম্বন্ধে অত্যাধিক বাতিক, এবং বারংবার একই ধরনের অযৌক্তিক ও অনাকাঙ্খিত চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকা কে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় OCD ( অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার )। এই রোগটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) -র মতে, ১০ টি মারণ ব্যাধির মধ্যে এই ব্যাধিটি অন্যতম। শতকরা ১৫ থেকে ২০ জন এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ব্যক্তির অবচেতন মন বা স্ট্রেস থেকে এই রোগের উৎপত্তি। কোনও ব্যক্তি যখন কোনো একটি ভাবনার বৃত্ত থেকে নিজেকে বার করতে পারেন না তখন সেটাকে বলা হয় অবসেশান আর সেই ভাবনা কে যখন তিনি কাজে রূপান্তরিত করেন এবং তা বার-বার করেন তখন সেটাকে বলা হয় কম্পালসন। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তি নিজের সমস্যার কথা বুঝতে পারেন কিন্তু সেই সমস্যাকে কাটিয়া উঠতে পারেন না। এই ধরনের রোগীদের বার হাত ধোয়া, কোনও জিনসই বারবার গুছিয়ে রাখা ও অতিরিক্ত পরিষ্কার পরিছন্ন থাকার আচরণগত সমস্যা থাকে।
শুচিবায়ু কথাটা শুনলেই সাধারনত আমাদের মনে কোনো এক মাঝ বয়সী ভদ্রমহিলার কথা ভেসে ওঠে, যিনি বার বার হাত পরিষ্কার করছেন, কিন্তু এই রোগ যে কোনও বয়সে যে কোনও লিঙ্গের মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। এটি একটি জেনেটিক রোগ ও হতে পারে। এছাড়া অত্যাধিক স্ট্রেস বা জীবনে হটাৎ ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা, সন্তানের জন্মগ্রহণ, নতুন চাকরি, নতুন দায়িত্ব এতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। তবে অবসাদগ্রস্ত দের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
এই রোগের লক্ষণ গুলি বেশ জটিল ও তার বহিঃপ্রকশ এক-এক জনের ক্ষেত্রে এক-এক রকম হয়ে থাকে। কখনো তার মনে হয় ঠিকমত হাত ধোয়া হল না। তখন তিনি বার বার হাত ধুতেই থাকবেন। বাড়ির কাজের লোক ঘর মুছে যাওয়ার পর মনে হতে পারে বাড়ির ময়লা পরিষ্কার হয় নি তখন তিনি বার বার ঘর মুছতে থাকবেন। একবার টাকা গোনার পর মনে হবে ভুল হয়ে গেছে তখন তিনি আবার গুনবেন। বাড়িতে তালা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর মনে হবে তালা টা হয় তো ঠিক মত দেওয়া হয় নি তখন তিনি আবার ফিরে আসবেন। তিনি বার বার একই চিন্তা করতে থাকবেন এবং অস্থির হবেন। অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন না। এতে শুধু যে সেই ব্যক্তি বিব্রত হন তা নয় পাশের লোকজনকেও সমস্যায় পড়তে হয়। ফলে সামাজিক ও পারিবারিক জীবন এমনকি কর্মক্ষেত্রেও তা বিপর্যয় ডেকে আনে। কখনো কখনো মানহানি পর্যন্ত ঘটতে পারে এবং এই ধরনের অপমানজনক পরিস্থিতি আক্রান্ত ব্যাক্তিকে আত্মহননের দিকে ঠেলে নিয়ে যেতে পারে তাই এই ধরনের মানুষদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই বিষয়টি মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।
এ জাতীয় রোগের রোগীরা তাদের উপসর্গের কথা কাউকে বলতে চায় না, এমন কি ডাক্তারকেও না । বরং তাদের উপসর্গের কথা যেন অন্য কেউ জানতে না পারে তার জন্য তারা সবসময় সচেষ্ট থাকেন।,তারা সবসময় ভাবতে থাকেন এটা তাদের দুর্বলতা, পৃথিবীর আর কোনো মানুষের এ রোগে নেই। তাই মনের গভীরে সব এলোমেলো চিন্তা গুলোকে লুকিয়ে রাখতে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু জেনে রাখা প্রয়োজন যে চিকিৎসা দ্বারা এমন রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া যায়। আধুনিক কালে উন্নত মানের ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে যা রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি দিতে পারে।
কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে একধরনের ইলেক্ট্রো-ম্যগনেটিক তরঙ মস্তিষ্কে পাঠিয়ে বিশেষ কিছু স্নায়ুকোষকে উদ্দীপ্ত করে এর চিকিৎসা করা হয়, একে নিউরোমডিউলেশান-থেরাপি বলা হয়। এই চিকিৎসা ব্যাবস্থা তখনই গ্রহণ করা হয় যখন ওষুধ এবং থেরাপি উভয়ই ব্যর্থ হয়।
এর সাথে নিয়মিত শরীচর্চা, যোগা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম এর থেকে মুক্তি পেতে বিশেষ সাহায্য করে। এছাড়াও বাড়ির সকল সদস্যদের উৎসাহিত করতে হবে যাতে তিনি এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন।
কাকে বলে ব্রঙ্কাইটিস? ফুসফুসের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি অংশে বাতাসের অক্সিজেন রক্তে মেশে। এই অংশটির…
ডায়াবেটিস এমন একটি অসুখ যা শরীরের সব অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে…
সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই যে চিকিৎসা করাতে হয় এমন নয়। একমাত্র যখন ইউরিক অ্যাসিড থেকে…
পাড়ার রাস্তা দিয়ে আনমনে হাঁটছিলেন বিধুবাবু। হঠাৎ পাড়ার কুকুর কালুর লেজে দিলেন পা! কালুর কী…
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী? হার্টের চারটি কুঠুরি বা চেম্বার থাকে। ওপরের দু’টি চেম্বার এবং নীচের দু’টি…
ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার আগে আগে শরীরে কী কী সঙ্কেত আসে? ব্রেন স্ট্রোক কিন্তু একটা ভয়াবহ…
This website uses cookies.
Read More
Leave a Comment