Search
Close this search box.

চিকিৎসককে টেস্ট রিপোর্ট দেখাতে পয়সা দিতে হবে কেন? এক ব্যক্তির অভিযোগে নড়ে বসল কমিশন!

চিকিৎসকের সঙ্গে প্রথম পরামর্শের পর বর্হিবিভাগে ৭ দিনের মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে দিতে হয় না ফিজ। তবে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেই পুরো ফিজ দিতে হয়! এই নিয়ম অসংখ্য রোগীর পক্ষে সমস্যা তৈরি করে।
সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পর নিখরচায় রোগ নির্ণায়ক পরীক্ষার রিপোর্ট দেখানোর জন্য ১৫ দিনের ছাড় দিতেই হবে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারপার্সন অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথা জানিয়েছেন। বর্তমানে বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতালে প্রথমবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পর রোগীদের হাতে থাকে ৭ দিন। ওই এক সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসকের কাছে পুনরায় ফিজ না দিয়ে রিপোর্ট দেখাতে পারেন রোগী বা রোগীর পরিজন।
অসীমবাবু জানিয়েছেন, ওপিডিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পর রিপোর্ট দেখানোর জন্য ১৫ দিনের একটা ছাড় দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের প্যানেল এই বিষয়ে একটি উপদেশাবলি জারি করবে।
চলতি ব্যবস্থায়, বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর ৭ দিনের মধ্যে রোগী রিপোর্ট দেখাতে গেলে কোনও চার্জ দিতে হয় না। সমস্যা হল, বহু রোগী এই অল্প দিনের মধ্যে সব রিপোর্ট করিয়ে উঠতে পারে না। অথচ অষ্টম দিন পড়ে গেলে রোগীকে পুরো ফিজ দিয়েই চিকিৎসককে রিপোর্ট দেখাতে হয়!
জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তি উক্ত বিষয়টি নিয়ে এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরেই পুনরায় কনসালটেশন ফি ছাড়াই রিপোর্ট দেখানোর সময় বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয় কমিশনে।
‘৭ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিনের মধ্যে নিখরচায় রিপোর্ট দেখানোর জন্য সকল বেসরকারি হাসপাতালের কাছে আমরা আর্জি জানাব। এই ধরনের নিয়ম আগে ছিল না। রোগীকে রিপোর্ট দেখানোর জন্য কোনও অর্থ ব্যয় করতে হতো না’— অসীমবাবু বলেন সাংবাদিকদের।
তিনি আরও বলেন—‘বিষয়টা সবসময় চিকিৎসকের হাতে থাকে না। বহু চিকিৎসক রয়েছেন যাঁরা কনসালটেন্ট নন। অনেকেই হাসপাতালের বেতনভুক চিকিৎসক। এই ধরনের বহু চিকিৎসক ব্যক্তিগতভাবে রোগীর কাছে রিপোর্ট দেখার জন্য অর্থ দাবি করতে চান না। তবে হাসপাতালের তৈরি নিয়ম ভাঙার উপায় তাঁদের থাকে না।’
তবে ঠিক কবে থেকে ৭ দিনের বদলে নিখরচায় ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেখানোর উপদেশাবলি জারি হবে তার সম্পর্কে অসীমবাবু স্পষ্ট করে কিছু জানাননি।
আমরি হাসপাতালের গ্রুপ সিইও এবং পূর্বভারতের হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া জানিয়েছেন, এই ধরনের উপদেশাবলি জারি হলেও তা বেসরকারি হাসপাতালের কোনও নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারবে না।
‘সমগ্র বিষয়টিতেই রোগী উপকৃত হবেন। কারণ অনেকসময়েই ৭ দিনের মধ্যে টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট সংগ্রহ করে তারপর চিকিৎসককে দেখানো সম্ভব হয় না রোগীর পক্ষে। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শের পর ল্যাবরেটরিতে টেস্ট করতে যাওয়ার জন্য রোগী সাধারণত ২ থেকে ৩দিন সময় নেন। টেস্ট-এর রিপোর্ট আসতে কিছু ক্ষেত্রে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে।’— বলেন রূপকবাবু।


এক বেসরকারি হাসপাতালের বরিষ্ঠ আধিকারিক জানান, অল্প কিছু হাসপাতালই রয়েছে যেখানে ডাক্তার দেখানোর পর ৭ দিনের মধ্যে নিখরচায় রিপোর্ট দেখানোর দিন ধার্য করা হয়েছে। তবে এমন কোনও সাধারণ আইন জারি নেই যেখানে বলা হয়েছে ৭ দিনের মধ্যে রোগী রিপোর্ট দেখাতে আসলে তবেই রোগীরা বিনামূল্যে রিপোর্ট দেখাতে পারবেন। এখন কোনওভাবে ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন উপদেশাবলি জারি করলে, প্রতিটি হাসপাতালেই রিপোর্ট দেখানোর নির্দিষ্ট সময়সীমা জারি হয়ে যাবে। ওই অফিসার আরও যোগ করেন— ‘আমাদের ওই উপদেশাবলির হাতে পাওয়া অবধি অপেক্ষা করতে হবে। তবে ১৫ দিনের মধ্যে ফিজ ছাড়াই রিপোর্ট দেখানোর জন্য উপদেশাবলি জারি হলে ক্ষতি কিছু নেই।’
‘তবে দেখতে হবে, এই নিয়ম যেন দ্বিতীয়বার কনসালটেশনের সঙ্গে গুলিয়ে না যায়। দ্বিতীয়বার রোগীকে পরামর্শ দেওয়ার সময় চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসাপদ্ধতির কিছু পরিবর্তনও করতে পারেন। এমন পরামর্শের ক্ষেত্রে ফিজ ধার্য হওয়া দরকার কারণ চিকিৎসক তাঁর দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই চিকিৎসা পদ্ধতির পরিবর্তন করেন।’— মতামত প্রকাশ করেন ওই আধিকারিক।

সাবস্ক্রাইব করুন

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন খবর, তথ্য এবং চিকিৎসকের মতামত আপনার মেইল বক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন.

Table of Contents

আমাদের সাম্প্রতিক পোষ্ট গুলি দেখতে ক্লিক করুন

আমাদের বিশিষ্ট লেখক এবং চিকিৎসক