সম্প্রতি ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স কলকাতার (আইএনকে) তরফে পার্কিনসন এবং মুভমেন্ট ডিজঅর্ডার-এর উপর আয়োজিত হল তিনদিন ব্যাপী (১৬ থেকে ১৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে ভারতে আয়োজিত স্নায়ুসংক্রান্ত সম্মেলনগুলির মধ্যে আইএনকে আয়োজিত সম্মেলনটিই হল সবচাইতে বৃহৎ সম্মেলন।
মানবশরীরে মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার হয় শরীরের মোটর সিস্টেমের গণ্ডগোলে। এই অসুখগুলির মধ্যে রয়েছে পার্কিনসন ডিজিজ, ট্রেমর, ডিসটোনিয়া, হাঁটতে সমস্যা হওয়া ইত্যাদি। পার্কিনসনের রোগীর শারীরিক গতি হ্রাস পাওয়া, হাত ও পায়ে কাঁপুনি দেখা দেওয়ার সঙ্গে আরও কিছু জটিলতা প্রকাশ পায়।
আইএনকে আয়োজিত সম্মেলনে এই সকল সমস্যা ও তার আধুনিক সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে উপস্থিত হয়েছিলেন এশিয়া এবং ওশিয়ানিয়া মহাদেশের তাবড় স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা। ছিলেন মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার সোসাইটি, মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার সদস্যরা। মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার নিয়ে যে সমস্ত ছাত্র, গবেষক ও চিকিৎসকরা কাজ করছেন তাঁদের একমাত্র সংগঠন হল এমডিএস। অন্যদিকে মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার সোসাইটি অব ইন্ডিয়া হল ভারতের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন। আইএনকে-এর ভাইস চেয়ারম্যান এবং নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ হৃষীকেশ কুমার ছিলেন সম্মেলনের সাংগঠনিক কমিটির প্রধান। এছাড়া ডাঃ কুমার এমডিএসআই-এর সাম্মানিক সম্পাদক।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই সম্মেলন মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার এবং পার্কিনসন ডিজিজ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে। এছাড়া দুই মহাদেশের চিকিৎসকরা এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে পরস্পরের মধ্যে মত বিনিময় করতেও সক্ষম হয়েছেন। ফলে এই সম্মেলনের কারণে উপকৃত হবেন বহু রোগী। প্রায় ৭০০ প্রতিনিধি উক্ত সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন। থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, মধ্য প্রাচ্য এবং এশিয়া ও ওশিয়ানিয়ার অন্যান্য দেশের বহু প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন ওই সম্মেলনে।
কনফারেন্সে উপস্থিত উল্লেখযোগ্য ব্যক্তির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমডিএস-এর সভাপতি অধ্যাপক ফ্রান্সিসকো কার্দোসো, অস্ট্রেলিয়ার ডাঃ ভিক্টর ফাং, ফিলিপাইনস-এর ডাঃ রেমন্ড রোজালেস, তাইওয়ানের ডাঃ ইয়া রু য়ু, তাইল্যান্ডের ডাঃ রুংরোজ ভিদ্যাসিরি, এমডিএসআই-এর সভাপতি ডাঃ ভাস্কর ঘোষ এই সম্মেলন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এই সকল কর্মযজ্ঞের মধ্যেই এশিয়ান অ্যান্ড স্পেসিফিক পার্কিনসন ডিজিজ অ্যাসোসিয়েশন-এর তরফে রোগীর সাহায্যার্থে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই কর্মশালায় রোগী এবং রোগীকে সহায়তা প্রদানকারীরা নানা বিষয়ে বিশেষজ্ঞকে প্রশ্ন করা এবং উত্তর জানার সুযোগ পান।