Search
Close this search box.

হাই ব্লাড প্রেসারের লক্ষণ

           প্রত্যেক ঘরে ঘরে হাই প্রেসারের সমস্যা। তবে, সমস্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানার আগে এটা জানা উচিত যে, হাই ব্লাড প্রেসারের একটা নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। তার আগে ব্লাড প্রেসার কী, এই বিষয়টি বুঝতে হবে।

            রক্তনালীর ভিতর থেকে প্রবাহিত হওয়ার সময় রক্ত যেই চাপ তৈরি করে, তা হল রক্তচাপ। সব মানুষের রক্তচাপ রয়েছে। তবে তা বাড়লে মানুষকে মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দিতে পারে। হৃদযন্ত্রকে রক্ত পাম্প করার জন্য বেশি পরিশ্রম করতে হয়। ফলে রক্তচাপে সমস্যা তৈরি হয়। উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না। তবে শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে এবং রোগী বুঝতেই পারেন না যে তার মারাত্মক শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে।

         বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যা জানাচ্ছে, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জন উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত। যারা দীর্ঘ দিন ধরে রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের প্রতি সপ্তাহে একবার প্রেসার মেপে দেখা উচিত। চিকিৎসকদের কথায়, আমাদের উপরের প্রেশার ১২০-১৩৯-এম এম/ এইচ জি হলে বলে বুঝতে হবে হাইনর্মাল। আর নীচের প্রেশার ৮০-৮৯-এর নীচে থাকলে হাই নর্মাল। তবে এর বেশি হলেই হাই ব্লাডপ্রেশার বলা যায়। এবার রক্তচাপ বাড়ার কারণ বেশিরভাগ সময় খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই বলা হয় এসেনসিয়াল হাইপারটেনশন(Essential Hypertension)। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিডনির অসুখ থেকে শুরু করে লিভারের সমস্যার কারণে প্রেশার বাড়ে। উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কোনও উপসর্গ নেই। তবে, কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে-

হাই ব্লাড প্রেসারের লক্ষণ

               i. ঝাপসা দৃষ্টি- বিশেষজ্ঞদের মতে, হঠাৎ করে কেউ যদি চোখের সমস্যায় ভুগতে থাকেন তাহলে প্রেসার মাপিয়ে দেখুন। কারণ চোখে সমস্যা ব্লাড প্রেশারের সংকেত হতে পারে।

                  ii.মাথার যন্ত্রণা- বিশেষজ্ঞদের মতে রক্তচাপ ১২০/৮০ থাকাটা স্বাভাবিক। আর রক্তচাপ যদি ১৮০/১২০ হয় তবে মাথায় যন্ত্রণা হবে।

                 iii. নাক থেকে রক্তপড়া– উচ্চ রক্তচাপে অনেক সময় নাক থেকে রক্ত পড়তেও পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।সেক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

                 iv.শ্বাসকষ্ট– উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় হাঁটার সময় বা ভারি জিনিস তুলতে গেলে অথবা সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামারসময়ে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।  

              v. বুকেব্যথা-বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও ব্লাড প্রেসার সংক্রান্ত সমস্যার ইঙ্গিত। যদি হঠাৎ খিঁচুনি বা শরীরে লাল দাগ দেখা যায়, তাহলে সেটিও হতে পারে এই সমস্যার উপসর্গ।

                vi. পা ফুলে ওঠা– হঠাৎ পা যদি ফুলে যায় তাহলে সেদিকেও নজর দেওয়া দরকার বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

একইসঙ্গে যদি বমি ভাব বা অ্যাংজাইটির মতো সমস্যা থাকলেও সতর্ক থাকা উচিত।এই প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, সাধারণত ব্লাড প্রেশার বেড়ে গেলে গর্ভবতী মহিলার শরীরে খুব একটা লক্ষণ প্রকাশ পায় না। আবার সবরকম ব্লাড প্রেশারের ওষুধও প্রেগন্যান্সিতে দেওয়া যায় না। তাই গর্ভাবস্থায় অ্যান্টিনেটাল চেকআপ অর্থাৎ প্রসবপূর্ণ যত্ন  খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি চেকআপে ব্লাড প্রেশার মাপলে মায়ের ব্লাডপ্রেশারের মাত্রা ঠিক আছে কিনা বোঝা যাবে। হবু মায়ের ব্লাড প্রেশার ১২০/৮০-এর মধ্যে থাকা উচিত। যদি সিস্টোলিক ১২০-১৩৯ এবং ডায়াস্টোলিক ৮০-৮৯-এর মধ্যে থাকে তাহলে তাকে বলা হয় স্টেজ-১ হাইপারটেনশন। এক্ষেত্রে ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন না থাকলেও প্রেশার যেন আর বেড়ে না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তবে স্টেজ ২ অর্থাৎ উপরের প্রেশার ১৪০ এবং নিচের প্রেশার ৯০-এর বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে। কেউ কেউ মনে করেন হাই ব্লাড প্রেসারের হয়ত কোনও চিকিৎসা নেই। তবে সঠিক খাবার, নিয়ম মেনে জীবনযাপন ও ওষুধের মাধ্যমে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাছাড়া রোজ শরীরচর্চা, ওজন ঠিক রাখা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, মানসিক চাপ না নেওয়া এবং ধূমপান না করেও হাই ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

সাবস্ক্রাইব করুন

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন খবর, তথ্য এবং চিকিৎসকের মতামত আপনার মেইল বক্সে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন.

Table of Contents

আমাদের সাম্প্রতিক পোষ্ট গুলি দেখতে ক্লিক করুন

আমাদের বিশিষ্ট লেখক এবং চিকিৎসক